নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিচ্ছে তৃণমূল। — ফাইল চিত্র।
দু’দিন আগে, বিএসএফের গুলিতে নিহত যুবক প্রেমকুমার বর্মণের বাবা-মাকে দলীয় সভামঞ্চে হাজির করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিচ্ছে তৃণমূল। দলের কোচবিহার জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি নিশীথের বাড়ি ঘেরাও কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতারা।
যদিও অভিষেককে রাজনীতিতে ‘অপরিপক্ক’ বলে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ। তিনি বলেন, ‘‘বিএসএফ জওয়ানেরা কেন সক্রিয় হয়েছেন, তাই নাকি আমার বাড়ি ঘেরাও হবে! তাতে হবেটা কী? বাড়িতে বয়স্কেরা থাকেন, বাবা-মা থাকেন। যদি ক্ষমতা থাকে, যদি বুকের পাটা থাকে, দিল্লি এসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘোষণা করুন। তা হলে বুঝব, নেতৃত্ব হিসাবে আপনার মধ্যে পরিপক্কতা এসেছে। আমার অফিস দিল্লির নর্থ ব্লকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে। কোচবিহার বা ভেটাগুড়িতে নয়।’’
নিশীথ দাবি করেন, রাজনৈতিক দিক থেকে উত্তরবঙ্গের মানুষের, রাজবংশীদের মন জয় করতে না পেরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ হয়ে উঠেছেন। উত্তরবঙ্গে ‘উশৃঙ্খল’ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছেন। পক্ষান্তরে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘বিজেপি তো কালীঘাট, ক্যামাক স্ট্রিট ঘেরাও করেছে, তখন বয়স্কদের কথা মনে হয়নি! আর নিরীহ যুবক খুনের পরেও, কেন কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি? আমরা ঘটনার ব্যবস্থা চাইব।’’
ডিসেম্বরে দিনহাটার গীতালদহ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন প্রেমকুমার বর্মণ (২৪) নামে এক যুবক। গত ১১ ফেব্রুয়ারি মাথাভাঙার কলেজ মাঠে সভা করেন অভিষেক। প্রেমের মা-বাবা সুখমনি বর্মণ ও শিবেন বর্মণকে মঞ্চে ডাকা হয়। অভিষেক বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ওঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এ বার সেই ঘটনাতেই ঘেরাও করা হবে নিশীথের বাড়ি। অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘রাজবংশীদের হয়ে দরদ দেখাবেন, আবার রাজবংশীদেরই খুন করবেন, এটা চলবে না।’’
সোমবার নিশীথের বাড়ি ঘেরাও নিয়ে দিনহাটার পেটলায় বৈঠক করে তৃণমূল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক জানান, সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঘেরাও চলবে। পঁচিশ হাজার মানুষকে অভিযানে শামিল করবে তৃণমূল। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি বিধায়ক সুকুমার রায় বলেন, ‘‘তৃণমূল অশান্তি সৃষ্টি করলে, বিজেপি কর্মীরাও বসে থাকবেন না। আবাস যোজনা থেকে শুরু করে চাকরি চুরির মতো দুর্নীতিতে ডুবে তৃণমূল। এর পরে, মানুষ তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরও বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাবে।’’ প্রেমকুমারের বাবা বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দাঁড়িয়েছেন। আমরা বিচার চাই।’’