প্রতীকী ছবি।
করোনা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও ভোটের সাংগঠনিক প্রস্তুতি বন্ধ রাখতে নারাজ তৃণমূল। ভোট-কুশলী পিকে-র পরামর্শে রাজ্য জুড়ে প্রায় ৬০০ সভার পরিকল্পনা করেছেন দলীয় নেতৃত্ব। এই কর্মসূচিতে বিধানসভা কেন্দ্র পিছু অন্তত দু’টি সভা করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, উৎসবের রেশ ঝেড়ে ফেলে পুরোদস্তুর নেমে পড়তে কালীপুজোর পরেই এই রাজনৈতিক কর্মসূচি নিবিড় করতে চাইছেন তাঁরা।
দুর্গোৎসবের পরে এ রাজ্যে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের কাছে জনসংযোগের অন্যতম মঞ্চ ‘বিজয়া সম্মিলনী’। করোনা আবহে তা আয়োজন না করলেও ভোটের মুখে হাত গুটিয়ে বসে থাকতেও পারছে না শাসক তৃণমূল। বরং, জেলা স্তরে একেবারে নির্দেশিকা দিয়ে এই কর্মসূচি সফল করতে বলা হচ্ছে। এই সভার ‘সাফল্যের’ দিকে নজর রাখবে পিকে-র সংস্থা। তাই কর্মসূচির ছবি ও ভিডিয়ো সংশ্লিষ্ট এলাকায় ওই সংস্থার প্রতিনিধি মারফত দলীয় নেতৃত্বের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘করোনার কথা মাথায় রেখে বিধি মেনেই দলের কর্মসূচি হবে। তবে কোনও কিছু তো একেবারে বন্ধ রাখলে চলবে না। রাজনৈতিক কর্মসূচিও নয়।’’
কর্মসূচির প্রথম পর্বে বিধানসভা পিছু দুই অথবা প্রয়োজনে তার বেশি সভা করতে দলের জেলা ও বিধানসভাভিত্তিক ভারপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর দশমীতে দলের নেতা, কর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তাঁর সেই কর্মসূচি অবশ্য বাতিল করা হয়েছিল। তবে আগামী সপ্তাহের গোড়া থেকেই এই কর্মসূচি শুরু হয়ে যাবে জেলায়। প্রসঙ্গত, করোনা আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তিন বিধায়ক মারা গিয়েছেন। মন্ত্রী-সহ আরও অনেক নেতা ও জনপ্রতিনিধি সেরে উঠলেও পর্যবক্ষেণে রয়েছেন।
এই কর্মসূচির জন্য সব বিধানসভা কেন্দ্রে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল। প্রতিটি সভায় দলের সব কর্মীকে যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা দলের আহ্বায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হবে না। তবে সর্বত্র সভা হবে।’’ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কি এই রকম সভা করা সম্ভব? তিনি বলেন, ‘‘সেই চেষ্টা নিশ্চয়ই করা হবে।’’ আগামী রবিবার যে জেলাগুলি থেকে এই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে তার অন্যতম পশ্চিম মেদিনীপুর। জেলায় তিন স্তরে সভা করে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তাঁরা। জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘করোনা কি শুধু তৃণমূলের সভায় সংক্রমণ ছড়াবে? এই তো বিজেপি নবান্ন অভিযান করল!’’