শিশির অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
তিনি খাতায়-কলমে এখনও তৃণমূলের সাংসদ। তা সত্ত্বেও তাঁর ‘নিজের দলে’র বিদায় ঘণ্টা বাজানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি করলেন কাঁথির প্রবীণ নেতা শিশির অধিকারী। সৈকত শহর দিঘার একটি ব্যবসায়ী সমিতির কালীপুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শনিবার রাতে গিয়েছিলেন শিশির। সেখানকার মঞ্চে রেশন-দুর্নীতির সমালোচনা করেন তিনি। পরে অনুষ্ঠান শেষে বেরিয়ে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সাংসদ মন্তব্য করেন, ‘‘এই সরকার যত তাড়াতাড়ি বিদায় নেবে, ততই মঙ্গল!’’
রাজ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মঞ্চে গেলেও শিশিরবাবু বিজেপির পতাকা হাতে নেননি। তিনি বা তাঁর সাংসদ-পুত্র দিব্যেন্দু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময়েও নিজেদের তৃণমূল সাংসদ বলেই পরিচয় দিয়েছেন। লোকসভার স্পিকারকে শিশিরবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৃণমূল চিঠি দিলেও বর্ষীয়ান এই সাংসদ তাঁকে সরাসরি আক্রমণ করা না হলে সচরাচর তৃণমূলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন না। সম্প্রতি তাঁর সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে তদন্তের দাবি তুলে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তার পরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় মুখ খুলতে শোনা গেল কাঁথির সাংসদকে।
এই মন্তব্যের জেরে সাংসদের বিরুদ্ধে তৃণমূল শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে কি না, সেই ব্যাপারে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল বলেছেন, ‘‘দলবদলু অধিকারী প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির কর্তা নিজেদের পরিবারের দুর্নীতি ঢাকা দেওয়ার জন্য বিজেপিকে খুশি করে চলেছেন। উনি শুধু বিশ্বাসঘাতকের বাবা নয়, নিজেও এক জন বিশ্বাসঘাতক!’’ তাঁর দাবি, ‘‘শিশির অধিকারীকে পাত্তাই দিচ্ছে না দল।’’ কুণালের মতে, শিশিরবাবু যে বিজেপিতে চলে গিয়েছেন, সেটা ধরে নিয়েই তাঁর সাংসদ-পদ বাতিলের জন্য লোকসভার স্পিকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।’’