শতাব্দী রায়কে নিয়ে জল্পনা শুরু।
দল বদলের হিড়িকের মাঝেই বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে জোর চর্চা শুরু হল রাজনৈতিক শিবিরে।
‘শতাব্দী রায় ফ্যানস ক্লাব’-এর পেজে সাংসদের নামে বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি বয়ান প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে নাম না করে দলেরই কারও বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি তাঁর বার্তা, “আপনাদের সঙ্গে আমার নিবিড় যোগাযোগ। আমি সর্বত্র যেতে চাই। আপনাদের সঙ্গে থাকতে আমার ভাল লাগে। কিন্তু মনে হয়, কেউ কেউ চায় না আমি আপনাদের কাছে যাই। বহু কর্মসূচির খবর আমাকে দেওয়া হয় না।’’ এখানেই না থেমে ‘নতুন সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার ইঙ্গিতও ওই পোস্টে দিয়ে রেখেছেন শতাব্দী। আগামী ১৬ জানুয়ারি, শনিবার দুপুর ২টোয় তিনি ওই সিদ্ধান্ত জানাবেন বলেও জানিয়েছেন। তার পরেই ওই পোস্ট ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে, তবে কি বীরভূমের সাংসদও শিবির বদল করছেন?
ফোন বা হোয়াটস্অ্যাপে চেষ্টা করেও এ ব্যাপারে শতাব্দীর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দেওয়ার লক্ষ্য যে বীরভূমের শীর্ষ তৃণমূল নেতৃত্ব, আরও সরাসরি বললে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, তা শতাব্দী-ঘনিষ্ঠেরা একান্তে মানছেন। আর সাংসদের পোস্টের কথা জেনে অনুব্রত বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পদযাত্রায় পাঁচ লক্ষ লোকের সামনে কে হেঁটেছেন, সবাই দেখেছেন। তার পরেও কেন এ সব লিখেছেন, সেটা তিনিই ভাল বলবেন।’’ প্রসঙ্গত, গত ২৯ ডিসেম্বর বোলপুরে পদযাত্রায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল শতাব্দীকে।
পর পর তিন বার বীরভূম লোকসভা আসনে জিতেছেন শতাব্দী। কিন্তু ২০১৯ সালে প্রবল বিজেপি হাওয়ায় জয় পেলেও সাংসদ শতাব্দীর সঙ্গে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রতের সম্পর্ক যে ‘মসৃণ’ নয়, প্রথম থেকেই সেটা অনেকের জানা। তৃণমূলের অন্দরের খবর, সে বার লোকসভা নির্বাচনে শতাব্দী ফের প্রার্থী হোন, চাননি অনুব্রত। তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের শীর্ষ স্তরের মত ছিল, সংগঠনের কাজে শতাব্দীকে তেমন করে বীরভূমে পাওয়া যায় না। দলের এক শীর্ষ নেতার মতে, জেলা নেতৃত্বকে গুরুত্ব না দিয়ে কিছু ক্ষেত্রে শতাব্দী নিজেকে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ ভাবেন। জেলা নেতৃত্বের ওই অংশের মতে, জেলার সংগঠন চালানো নিয়ে শতাব্দীর ‘অনধিকার চর্চা’ও ছিল। যদিও প্রার্থী ঘোষণার সময়ে মমতা জেলা নেতৃত্বের সেই ‘ইচ্ছা’য় সিলমোহর দেননি। প্রার্থী হয়েছিলেন শতাব্দীই। তবে ভোট উতরে গেলেও জেলায় সংঘাত মেটেনি। যদিও সম্প্রতি বোলপুরে মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে।