তৃণমূলের লোকসভার সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।—ফাইল চিত্র।
নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের পত্র-যুদ্ধে নতুন অধ্যায় যোগ হল! মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে তিনি ‘ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা’ মেটাচ্ছেন এবং বিজেপির রাজনৈতিক মত প্রচারে নেমেছেন, এই অভিযোগ করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে চিঠি পাঠালেন তৃণমূলের লোকসভার সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল যে সাংবিধানিক গণ্ডির মধ্যে না থেকে কেবলই প্রচার-প্রিয় হয়ে উঠেছেন, এই সওয়াল করে তাঁকে বিতর্কেও আহ্বান করেছেন আইনজীবী কল্যাণবাবু। করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর ‘ব্যর্থতা’ আড়াল করতেই এমন আক্রমণের কৌশল নেওয়া হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করে রাজ্যপালও জানিয়েছেন, জনস্বার্থে তিনি যে কোনও বিতর্ক বা আলোচনায় রাজি।
কয়েক দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যপালের পত্র-যুদ্ধ চরমে উঠেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর পাঁচ পাতার চিঠির জবাবে প্রথমে পাঁচ পাতা এবং তার পরে ১৪ পাতার চিঠি পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল ধনখড়! কল্যাণবাবুর চার পাতার চিঠির জবাবেও চার পাতার পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন তিনি। এরই পাশাপাশি মঙ্গলবার টুইট করে ফের মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষও করেছেন রাজ্যপাল। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বাক্ চাতুরি নয়, মানুষের সমস্যার দিকেই এখন আমাদের নজর দেওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ছুরি শানানোর সময় এখন নয়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, অজুহাত, বলির পাঁঠা বা দায় এড়ানোর পথ খোঁজা ছেড়ে মানুষের উপকারকে অগ্রাধিকার দিন। রাষ্ট্রের মধ্যেই আলাদা রাষ্ট্র হয়ে থাকার মনোভাব অসাংবিধানিক এবং অনুপযুক্ত।’’
রাজ্যপালের এই মনোভাবকেই তাঁর চিঠিতে আক্রমণ করেছেন সাংসদ কল্যাণবাবু। তিনি লিখেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারের মন্ত্রীদের বারবার আক্রমণ করে আপনি বুঝিয়ে দিচ্ছেন, আপনার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা আছে এবং গোটা দেশ যখন করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখন আপনি রাজ্যপাল হিসেবে আপনার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিজেপির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত থাকছেন’। মুখ্যমন্ত্রী ‘সংখ্যালঘু তোষণ’ করেছেন বলে রাজ্যপাল তাঁর চিঠিতে যে মন্তব্য করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গ টেনে কল্যাণবাবুর অভিযোগ, বিজেপির মতাদর্শ মাথায় রেখে রাজ্যপাল পরোক্ষ ভাবে রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতা ও বিভেদ ছড়ানোয় উস্কানি দিচ্ছেন।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে রাজ্যপাল কল্যাণবাবুকে পাল্টা লিখেছেন, ‘আপনি এবং আপনার জায়গায় থাকা অন্যদের বরং মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝানো উচিত, যাতে, তিনি সংবিধান মেনে চলেন এবং দায় না এড়িয়ে করোনা মোকাবিলায় নেতৃত্ব দেন। তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে রাজ্যপাল সব সময়ই তৈরি’।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)