নরেন্দ্র মোদীকে রামনবমীর শুভেচ্ছা জানালেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রামনবমীতে রাজ্যে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। তবে কার্যত দলনেত্রীর সেই মতের উল্টো পথে হেঁটেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে রামনবমীর শুভেচ্ছা জানালেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার এক দীর্ঘ চিঠিতে মোদীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অধিকারী পরিবারের এই সদস্য। পাশাপাশি, করোনা মোকাবিলায় একগুচ্ছ প্রস্তাবও দিয়েছেন দিব্যেন্দু। এই প্রথম নয়, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সোমবারও নিজের দলের নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বদলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে করোনা সংক্রমণ রুখতে আবেদন করেছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার জনসভা থেকে মমতা অভিযোগ করেন, রামনবমীতে হিংসা ছড়ানোর পরিকল্পনা করছে বিজেপি। সেই প্ররোচনাতে পা না-দেওয়ার জন্য সকলকেই আর্জি জানান তিনি। তবে মঙ্গলবারই মোদীর উদ্দেশে দিব্যেন্দু লিখেছেন, ‘রামনবমী উপলক্ষে দেশের সাহসী প্রধানমন্ত্রীকে আমার শুভেচ্ছা জানাই। যিনি এই ভয়ানক করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব লড়াইয়ে সাহসী প্রচেষ্টা করেছেন। দেশবাসী হিসাবে আপনার যোগ্য নেতৃত্ব এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান তথা করোনাযোদ্ধাদের উপর আমাদের ভরসা রয়েছে’।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা দিব্যেন্দুর চিঠি।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দিব্যেন্দুর প্রশংসা পেলেও এ নিয়ে বহু বার তাঁর দলনেত্রীর সমালোচনার মুখে পড়েছেন মোদী। মমতার অভিযোগ, ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠিতে করোনার টিকা কেনার জন্য রাজ্য সরকার মোদীর কাছে আর্জি জানালেও তাতে সাড়া দেননি তিনি। বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভাতে এ নিয়ে মোদীকে আক্রমণ করেছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
তবে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু দলের সেই অভিমতের বিপরীতে হেঁটেছেন। করোনা রুখতে মোদীর কাছে একাধিক প্রস্তাবও দিয়েছেন দিব্যেন্দু। সমস্ত স্কুল-কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেগুলিকে কোভিড কেয়ার সেন্টারে পরিণত করা অথবা করোনা মোকাবিলায় সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনীকে কাজে লাগানোর মতো প্রস্তাব রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া, কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের উৎপাদন বাড়ানো থেকে শুরু করে আয়ূষ এবং পশু চিকিৎসকদেরও করোনা রোখার কাজে ব্যবহার করার কথাও বলেছেন দিব্যেন্দু।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে পা রাখার পর থেকেই তৃণমূলনেত্রীকে একের পর এক জনসভায় বিঁধেছেন দিব্যেন্দুর দাদা শুভেন্দু। অধিকারী পরিবারের কর্তা তথা দিব্যেন্দুর বাবা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী, ভাই সৌম্যেন্দু এবং স্ত্রী সুতপাও আগেই দল ছেড়েছেন। তবে দিব্যেন্দু এখনও তৃণমূল ছাড়ার বিষয়ে প্রকাশ্যে উচ্চবাচ্য করেননি। যদিও ধনখড়ের পর এ বার মোদীর উদ্দেশে তাঁর চিঠির পর সে জল্পনা আরও জোরদার।