ধর্ষণ-বিরোধী আইন নিয়ে সরব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
ধর্ষণ রুখতে কঠোরতম আইনের পক্ষে আবার সওয়াল করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘৫০ দিনের মধ্যে বিচার করে দোষীর শাস্তি হোক’, ধর্ষণ-বিরোধী কেন্দ্রীয় আইন বলবৎ করার দাবি জানান তৃণমূলের সেনাপতি। সেই কথা বলতে গিয়ে তিনি টানেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রসঙ্গও।
অভিষেক বলেন, ‘‘প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর ধর্ষণের মতো নারকীয় ঘটনা ঘটছে। এই পরিসংখ্যানই সময় বেঁধে ধর্ষণ-বিরোধী আইন কার্যকর করার দাবি আরও জোরদার করছে।’’ ধর্ষণ-বিরোধী আইন কার্যকর করার বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পথ দেখাচ্ছে, দাবি অভিষেকের। তিনি আরও জানান, ধর্ষণ রুখতে কেন্দ্রীয় সরকারকে অবশ্যই কঠোর এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ করতে হবে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সংসদে আসন্ন অধিবেশনে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা আইন সংশোধনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার দ্রুত করতে হবে।’’
ঘটনাচক্রে, অভিষেক যখন এ কথা বলছেন, তখন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনে ‘অপরাজিতা বিল ২০২৪’ আনে। সেই বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হলে ধর্ষণের সাজা হবে জরিমানা-সহ যাবজ্জীবন কারাবাস, নয়তো মৃত্যু। উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের আবহে ধর্ষণ, মহিলা নির্যাতন রুখতে কড়া আইন আনার দাবি উঠেছে। তৃণমূলের তরফে প্রথম থেকেই ওই দাবি জানানো হয়। সমাজমাধ্যমে গত ২২ অগস্ট অভিষেক লেখেন, ‘‘এমন কঠোর ধর্ষণ-বিরোধী আইন আনতে হবে, যা ঘটনার ৫০ দিনের মধ্যে অপরাধীকে চিহ্নিত করে দোষী সাব্যস্ত করা নিশ্চিত করবে এবং তাতে দোষীকে কঠোরতম সাজা দেওয়ার নিদান থাকবে।’’ মঙ্গলবার সেই একই কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দেন অভিষেক।
ধর্ষণ-বিরোধী আইন নিয়ে শুধু সমাজমাধ্যমে নয়, মেয়ো রোডে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সমাবেশ থেকেও একই দাবি জানান। সেই সভা থেকে অভিষেক জানান, ধর্ষণ-বিরোধী কঠোর আইনের দাবিতে আন্দোলন তৃণমূল দিল্লি পর্যন্ত নিয়ে যাবে। তিনি স্পষ্ট বলেন, “ওঁরা বলছেন দাবি এক, দফা এক— মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ। আমি বলছি, দাবি এক, দফা এক— ধর্ষণ বিরোধী আইন। আগামী দিনে তৃণমূল দিল্লিতে যাবে যাতে কেন্দ্রীয় সরকার ধর্ষণ বিরোধী আইন আনে। রাতারাতি নোট বাতিল হতে পারে, লকডাউন করতে পারে, তা হলে ধর্ষণ-বিরোধী আইন আসে না কেন? যাঁরা এই নারকীয় বর্বর ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সমাজে থাকার অধিকার নেই।” ওই সমাবেশ থেকেই তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, শীঘ্রই রাজ্য সরকার ধর্ষণ-বিরোধী বিল বিধানসভায় আনবে। সেই জন্য বিশেষ অধিবেশন ডাকা হবেও বলেও জানান মমতা। মঙ্গলবার সেই বিল আনা হয় বিধানসভায়।