মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
অপরাজিতা বিল প্রসঙ্গে মমতা বললেন, ‘‘এই বিল একটা ইতিহাস! প্রধানমন্ত্রী পারেননি। আমরা পারলাম। করে দেখালাম। প্রধানমন্ত্রী দেশের লজ্জা! উনি মেয়েদের রক্ষা করতে পারেননি। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি। ’’
বিরোধীদের শোরগোল এবং বিক্ষোভের মধ্যেই বলে চলেছেন মমতা। বিরোধী বিধায়কদের বললেন, আমি হাতজোড় করে বলছি, আপনারা চুপ করে শুনুন।
গুজরাত এবং উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে কথা বলছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবাদে বিজেপি বিধায়কেরা চিৎকার করতে শুরু করেন। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার বক্তৃতা চলাকালীনই পদত্যাগের দাবি তুলছিলেন বিরোধীরা। মমতা তাদের জবাব দিয়ে হুঙ্কার দিয়ে বললেন, ‘‘আগে নরেন্দ্র মোদীর পদত্যাগ চাই। তার পরে বাকি কথা।’’
বিরোধীদের বললেন, ‘‘আমাকে কটু কথা বললে আমার কিচ্ছু যায়-আসে না। আপনারা যা বলছেন বলুন। কিন্তু বাংলা মা-কে বদনাম করবেন না। আপনারা আমাকে যা যা বলছেন, তা যদি আমার দলের লোকেরা প্রধানমন্ত্রী আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, তা হলে কেমন লাগবে?’’
মমতা বললেন, ‘‘কামদুনিতে তিন সপ্তাহে চার্জশিট হয়েছিল। আপানারা বলেছেন ট্রেনে ধর্ষণ হয়েছে। ট্রেনটা কি আমাদের? ট্রেনের ভিতরের সুরক্ষার দায়িত্ব আরপিএফের। সেটা তাদের ব্যর্থতা।’’
শুভেন্দুর খবরের প্রিন্ট আউট প্রসঙ্গে মমতা বললেন, ‘‘খবরের কাগজ তৈরি করাও হতে পারে। ওগুলো ফেক নিউজ়। আর আপনারা এই সব বলছেন, উন্নাওয়ের কথা বলবেন না। হাথরসের ঘটনায় বিচার পায়নি কেউ। এইগুলো ফলিয়ে বলার কথা নয়। ওই সমস্ত ঘটনা লজ্জার। যে বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, যে বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, তাকে ফুল-মালা দিয়ে সংবর্ধনা! ধর্ষণে উস্কানি নয়?
অপরাজিতা বিলকে সমর্থন করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, আমি রেজ়াল্ট দেখতে চাই। ওই বিলকে আগে আইনে পরিণত করুন। তারও জবাব দিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘বিরোধী দলনেতাকে বলুন বিলে রাজ্যপালকে বলুন সই করতে। তার পরেই দেখবেন রুলস হয়ে গিয়েছে।’’
মমতা বললেন, ‘‘আমাদের পুলিশ তদন্ত করছিল। যত দিন তদন্ত কলকাতা পুলিশের হাতে ছিল, আমি কোনও দায়িত্ব পালন করিনি, বলতে পারবেন না। ১২ তারিখ নির্যাতিতার বাড়িতে যাই। যা যা তদন্তে উঠে এসেছিল, সেই সব তাঁর মা- বাবার কাছে পাঠানো হয়। আমি ওঁদের সঙ্গে ফোনেও কথা বলেছি। রবিবার পর্যন্ত সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু আদালত তার আগেই সেই তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে। আমরা সিবিআইয়ের কাছে বিচার চাই।’’
আজ ৩ সেপ্টেম্বর ঐতিহাসিক দিন। ১৯৮১ সালে এই দিনে মেয়েদের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য রাষ্ট্রসংঘের নারী বৈষম্য বিরোধী কমিটি হয়। এই সময়ে মিহির গোস্বামী বলেন, লাইনে এসো। শুনে মমতা বললেন, ‘‘আমার লাইনে আসতে সময় লাগবে। আপনার লাইন বেলাইন হয়ে গেছে। ধর্ষণের মতো নিকৃষ্ট অপরাধের শাস্তি দেওয়ার কথা আমরা বলছি।’’