তিনি বলেন, “আমাদের কাছে একটি ভিডিয়ো এসেছে। পাণ্ডবেশ্বের বিধায়ককে সেই ভিডিয়োতে বলতে শোনা যাচ্ছে, বিজেপি কর্মীদের কী ভাবে ভোটদানে বিরত রাখতে হবে, তাঁদের কী ভাবে আটকাতে হবে এবং সে বিষয়ে তৃণমূলের কী পরিকল্পনা আছে মাননীয় বিধায়নক তা নিজে স্বীকার করছেন।”
নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের খোলাখুলি হুমকি দিতে শোনা গেল পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসায় শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভার অন্তর্গত লাউদোহা ব্লকে এক কর্মী বৈঠকে বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি ওই হুমকি দেন বলে অভিযোগ। ওই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যদিও যাচাই করেনি।
ভিডিয়োতে বিধায়ককে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘যাঁরা কট্টর বিজেপি, যাঁদেরকে হেলানো যাবে না তাঁদের চমকাতে হবে। বলবেন, আপনি যদি ভোট দিতে যান, তা হলে ধরে নেব বিজেপি-কে ভোট দেবেন। ভোটের পর আপনি কোথায় থাকবেন সেটা আপনার নিজের বিষয়। আর আপনি যদি ভোট দিতে না যান তা হলে ধরে নেব, আপনি আমাদের সমর্থন করছেন। আপনি ভাল ভাবে থাকুন ব্যবসা করুন, চাকরি করুন, আমরা আপনার সঙ্গে আছি। ক্লিয়ার!’’
ভিডিয়োটি ঘিরে বিতর্ক শুরু হওয়ার পর নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘ভিডিয়োটি অনেক পুরনো। কোনও পঞ্চায়েত ভোটে হয়তো কর্মীদের উজ্জীবিত করার জন্য বলেছিলাম। পাণ্ডবেশ্বরে আমরা সব দলের কর্মীরা একসঙ্গে মিলেমিশে থাকি। এখানে শান্তিতে ভোট হয়। শান্তিতে ভোট হবে।’’ তবে একই সঙ্গে এই ভিডিয়ো প্রসঙ্গে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘হাওয়া গরম করার জন্যই বিজেপি এই ধরনের কাজ করছে। প্রচারের আলোয় আসতে চাইছে ওরা। তৃণমূলের বদনাম করার জন্যই এ সব কাজ করছে বিজেপি।’’
তৃণমূল বিধায়কের এই ভিডিয়ো প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “উনি একটা জিনিসই বুঝেছেন। বিজেপি-র লোকেরা যদি ভোট দেওয়ার সুযোগ পান, তা হলে ওঁরা হারবেন। তবে এ রকম হুমকি না দিলেই ভাল হয়।” এর পরেই তাঁর কটাক্ষ, “উনি তো অনুব্রত মণ্ডলের শিষ্য! অনুব্রত মণ্ডল হয়তো কিছু দিন পর জেলে থাকবেন। তাঁর সঙ্গে লুডো খেলার জন্য আরও দু’তিন জন লাগবে, তখন হয়তো ওঁকে যেতে হবে।”
আসানসোল জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল বিধায়কের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে একটি ভিডিয়ো এসেছে। পাণ্ডবেশ্বের বিধায়ককে সেই ভিডিয়োতে বলতে শোনা যাচ্ছে, বিজেপি কর্মীদের কী ভাবে ভোটদানে বিরত রাখতে হবে, তাঁদের কী ভাবে আটকাতে হবে এবং সে বিষয়ে তৃণমূলের কী পরিকল্পনা আছে মাননীয় বিধায়নক তা নিজে স্বীকার করছেন।” বাপ্পার কথায়, “শিল্পাঞ্চলের মানুষ দেখেছেন, পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল কী ভাবে ভোট লুঠ করেছে। এই বিধায়কের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত নির্বাচন কমিশনের। আমরা অভিযোগ জানাব। মাননীয় রাজ্যপালের কাছেও এ বিষয়ে অভিযোগ জানাব।”