সমরেশ দাস। নিজস্ব চিত্র
টানা এক মাসের লড়াই থামল সোমবার। ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ সল্টলেকের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল করোনায় সংক্রমিত এগরার তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাসের। বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। এর আগে তৃণমূলের ফলতার বিধায়ক তমোনাশ ঘোষও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
এ দিন সমরেশের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকবার্তায় তিনি জানান, ‘বিধায়ক শ্রী সমরেশ দাসের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর প্রয়াণে রাজনৈতিক জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি হল। তাঁর নিকটাত্মীয় ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’ স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, আইএমএ-র রাজ্য শাখার সম্পাদক শান্তুনু সেন এ দিন সমরেশকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন। তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এক প্রিয়জনকে হারালাম। সমবায় আন্দোলনে অপূরণীয় ক্ষতি হল।’’
প্রথম জীবনে বলাগেড়িয়া সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন সমরেশ। পরে স্কুলে শিক্ষকতাও করেছেন। সত্তরের দশকে প্রজাতন্ত্র সোশালিস্ট পার্টির (পিএসপি) হাত ধরে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু। ১৯৮২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সোশালিস্ট (ডব্লিউবিএসপি) পার্টিতে যোগ দেন, রাজ্য কমিটির সদস্যও ছিলেন। ১৯৯৫ সালে সমরেশ আসেন সিপিএমে। তারপর ২০০৯ সালে শিশির অধিকারীর হাত ধরে তাঁর তৃণমূলে যোগদান। এগরার তিনবারের বিধায়ক সমরেশ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের সমবায় সেলের চেয়ারম্যানও ছিলেন।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই নাগরিকত্বে নজর
গত ১৪ জুলাই বালিঘাই বাজারে দলীয় সভার পরই সমরেশের জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখা দেয়। ১৭ জুলাই এগরা সুপার স্পেশালিটিতে তাঁর লালারসের নমুনা নেওয়া হয়। ১৮ জুলাই করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। প্রথমে পাঁশকুড়ার বড়মা করোনা হাসপাতালেই তাঁকে ভর্তি করানো হয়। ১৯ জুলাই স্থানান্তরিত করা হয় বেলেঘাটা আইডিতে। ২১ জুলাইয়ের পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বাড়তে থাকে শ্বাসকষ্ট। তাঁকে সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতালে
স্থানান্তরিত করা হয়। ২৪ জুলাই থেকে ছিলেন ভেন্টিলেশনে।
এগরা ২ ব্লকের বাসুদেবপুর গ্রামে এ দিন বিধায়কের মৃত্যুসংবাদ পৌঁছনোর পরে শোকের ছায়া নামে। স্ত্রী, দুই মেয়ে, চার ছেলে, নাতি-নাতনি-সহ গোটা পরিবার শোকস্তব্ধ। ছোট ছেলে বিশ্বসারথি দাস বলেন, ‘‘বাবাকে যে এ ভাবে হারাতে হবে ভাবিনি।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)