মঙ্গলবার দলীয় কর্মশালায় বাঁকুড়়ার তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ায় পুরভোটের আগে আত্মসমালোচনার সুর শোনা গেল তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তীর কণ্ঠে। মঙ্গলবার বাঁকুড়়ায় একটি দলীয় কর্মশালায় বাঁকুড়ার বিধায়কের দাবি, ভোটের আগে মানুষের কাছে হাতজো়ড় করলেও তাতে জয়ের পর প্রার্থীদের লেজ গজায়। এ আচরণ যে বেশি দিন মানুষ মেনে নেবে না, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। বিধায়কের এ হেন মন্তব্যের পর তা নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছা়ড়েনি বিজেপি। তাদের পাল্টা দাবি, তৃণমূল বিধায়কের আত্মসমালোচনা সত্ত্বেও চিঁড়ে ভিজবে না।
পুরভোটের আগে মঙ্গলবার বাঁকুড়ার রবীন্দ্র ভবনে তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের একটি বুথভিত্তিক রাজনৈতিক কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন অরূপ। নিজের ভাষণে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভোটের আগে মানুষের কাছে গিয়ে আমরা হাতজোড় করি। ভোটে জিতে গেলে আমাদের লেজ গজায়। এটাই আমাদের দোষ! মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করি না। এমনকি, ভাল করে কথাও বলি না। এ আচরণ বেশি দিন চলতে পারে না!’’
পুরভোটে প্রার্থী হতে গেলেও আম জনতার দাবিই প্রধান মাপকাঠি হবে বলে দলীয় নেতাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন অরূপ। প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনের ফল অনুয়ায়ী বাঁকুড়া পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। বাকি ৯টি ওয়ার্ডে তৃণমূল এগিয়ে ছিল। সূত্রের খবর, বাঁকুড়া পুরসভার এক-একটি ওয়ার্ডের জন্য দলের কাছে তিন-চার, এমনকি পাঁচ জনেরও নাম জমা প়ড়েছে। এই আবহে পুরভোটে প্রার্থী হওয়া নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। দলীয় নেতাদের উদ্দেশে অরূপ বলেন, ‘‘যে যতই নাম পাঠান, যাঁরা ভাল কাজ করেছেন তাঁরাই টিকিট পাবেন। মানুষ চাইলে তবেই দল আপনাকে প্রার্থী করবে। মানুষ না চাইলে দল আপনাকে প্রার্থী করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে দল আপনাকে অন্য জায়গা দিলেও পুরভোটের টিকিট দিতে পারবে না।’’
তৃণমূলের আত্মসমালোচনাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নিলাদ্রীশেখর দানার দাবি, “কাটমানিতে ডুবে রয়েছেন তৃণমূলের ছোট-বড়-মাঝারি, সব নেতা। সরকারি সমস্ত প্রকল্পে কাটমানি নেওয়া তৃণমূলের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থায় ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। প্রকাশ্যে আত্মসমালোচনা করে মানুষের মন ভোলানো যাবে না।”