টেট মামলায় আদালতে প্রশ্নের মুখে মানিক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দুই সপ্তাহের মধ্যে গোটা পরিবারের সম্পত্তির হিসেব দিতে হবে। টেট মামলায় তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের।
মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা হাই কোর্টে হাজিরা দেন তৃণমূল বিধায়ক তথা সদ্য প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে অপসারিত মানিক ভট্টাচার্য। তাঁকে প্রথমেই বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আপনি যেহেতু বিধানসভার সদস্য, তাই কাঠগড়ায় তুলছি না।’’ এর পর নদিয়ার পলাশিপাড়ার বিধায়কের জন্মতারিখ, পরিচয় ইত্যাদি জানার পর আদালতের নির্দেশ, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে তাঁর সম্পত্তি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। স্ত্রী, পুত্র এমনকি, বউমার নামে কত সম্পত্তি রয়েছে, তারও তথ্য দিতে হবে। বিয়ের আগে পর্যন্ত মেয়ের নামে কত সম্পত্তি ছিল সেটাও হলফনামা আকারে জানাতে হবে। হলফনামা জমার শেষ তারিখ ৫ জুলাই।
এর পরই আদালত জানায়, ভবিষ্যতে আরও কোনও সম্পত্তি নিজের বলে দাবি করতে পারবেন না মানিক। এই হলফনামায় দেওয়া তথ্যকেই সঠিক বলে মনে করা হবে। উল্লেখ্য, সোমবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের মামলায় পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে অপসারণের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। তাঁর পরিবর্তে দায়িত্ব সামলাবেন পর্ষদের সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচি।
এ দিন আদালতের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে কী কী জানালেন মানিক ভট্টাচার্য? পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে অপসারিত বিধায়ক জানান, তাঁর জন্ম ১৯৫৪ সালের ৭ মে। বাড়ি নদিয়ায়। ১৯৭১ সালে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। পরে কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বি.কম পাশ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন। পরে পিএইচডি করেছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। তার পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি পান। তবে আদালতে কোনও দিন প্র্যাকটিস করেননি।
আদালতের প্রশ্নে বিধায়ক জানান, তাঁর পেশা শিক্ষকতা। অধ্যাপনা করেছেন সুরেন্দ্রনাথ সন্ধ্যা কলেজ, বিজয়গড় বিদ্যাপীঠে। যোগেশ চন্দ্র ল’ কলেজে ১৯৯৮ সাল থেকে অধ্যক্ষ ছিলাম। ২০১৪ সালে অবসর নেন। এখন থাকেন কলকাতার যাদবপুরে। মানিকের কথায়, ‘‘৩-৪ বছর আগে মেয়ের বিয়ে হয়েছে। আমার এখন সময়টা মনে নেই। স্ত্রী বলতে পারবেন। ছেলে সিইএসসি-এর প্রাক্তন অফিসার। এখন রাজ্য সরকারের আইটি বিভাগে কর্মরত। ছেলের বউ চিকিৎসক।’’
আদালত তাঁর সম্পত্তির হিসেব চাইলে বিধায়ক বলেন, ‘‘নদিয়ায় আমার পৈতৃক বাড়ি রয়েছে। যাদবপুরে ফ্ল্যাট রয়েছে। নয়াবাদ (গড়িয়ার কাছে) জমি রয়েছে। ১৯৮৫ সালে ১০ হাজার টাকায় কিনেছিলাম।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি ভগবানের নামে শপথ করে বলছি, এ ছাড়া আর কোথাও কোনও সম্পত্তি আমার নেই।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।