বিজেপি-তে যোগ দিলেন ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদার-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মী। —নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুক ডায়মন্ড হারবারে শাসকদল তৃণমূলে ফাটল। মঙ্গলবার বিজেপি-তে যোগ দিলেন ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদার-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মী। তৃণমূল নেতাদের দলবদলের পর শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর নিশানা থেকে বাদ পড়েননি ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেকও।
মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে বিজেপি আয়োজিত এক সভায় এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন দীপক। তিনি ছাড়াও ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত বিভিন্ন বিধানসভার অনেক নেতাও বিজেপি যোগ দিয়েছেন। সোমবার দলের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানোর পর দীপকের বিজেপি-তে যোগদান একপ্রকার নিশ্চিত ছিল। মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে বিজেপি-তে যোগদান করেন ফলতার নেতা তথা জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য ভক্তরাম মণ্ডল, দিলীপ মণ্ডল, গ্রামসভার সদস্য যুগল দাস এবং যুবনেতা জুলফিকার শেখ। বিজেপি-র হাত ধরেছেন কুলপি ব্লকের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যুৎকুমার মণ্ডল এবং শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি নুর হাবিব পুরকাইতও। পাশপাশি, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় হাজারখানেক তৃণমূল নেতা-কর্মী বিজেপি-তে যোগ দেন।
তৃণমূলের নেতারা বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর সেই সভামঞ্চ থেকেই শাসকদলকে তীব্র ভাবে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর আক্রমণের তির থেকে অভিষেকও বাদ পড়েনি। ডায়মন্ড হারবারের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ব্লক যুব তৃণমূল তৃণমূল নেতা মাহাবুবার রহমান গায়েন, গৌতম অধিকারী, জাহাঙ্গির খানেদের নামেও তোপ দাগেন শুভেন্দু। ভবিষ্যতে পাথরপ্রতিমা, সাগর, কুলপি, রায়দিঘি, ক্যানিং, ভাঙড়, মগরাহাট, কাকদ্বীপ, জয়নগর, বাসন্তী-সহ বিভিন্ন এলাকার তৃণমূল নেতাদের বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিতও দেন শুভেন্দু। তাঁর হুঁশিয়ারি, “এই বাংলায় পরিবর্তন শুরু হয়েছিল প্রথম পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি নদীর দুই পারে।এ বার এই জেলার হাত ধরেই ফের পরিবর্তন হবে।”
তবে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। ডায়মন্ড হারবার-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অরুময় গায়েনের অভিযোগ, “এই সব মীরজাফরের দল এত দিন দলের খেয়ে এখন অন্য শিবিরে নাম লেখাচ্ছে। এরা সবক’টাই বিশ্বাসঘাতক। তবে এদের চলে যাওয়াতে দলের কিছু আসে যায় না।”
তৃণমূল ছেড়ে দলের একাংশ বিজেপি-র দিকে ঝুঁকলেও আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরাই জিতবেন বলে দাবি করেছেন অরুময়। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মানুষ ভালবাসে। আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূলই জিতবে।” যদিও অরুময়ের দাবি উড়িয়ে পাল্টা দাবি করেছে বিজেপি। দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা (পূর্ব)-র সভাপতি সুনিপ দাস বলেন, “জেলার সবক’টি আসনেই আমরা জিতব। আজ ট্রেলার ছিল। তৃণমূল থেকে রোজ শয়ে শয়ে নেতা-কর্মী বিজেপিতে আসছেন। এমন হতেও পারে যে অরুময় নিজেই এক দিন বিজেপি-র কাছে আশ্রয় চাইছেন।”