TMC MLA

বিধায়কের শপথের জন্য রাজ্যপালকে চিঠি দিতে মন্ত্রী শোভনদেবকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতার

৮ সেপ্টেম্বর উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন নির্মলচন্দ্র। কিন্তু রাজভবন-নবান্নের সংঘাতের কারণে তাঁর শপথগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। রবিবার মুখ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৪৯
Share:

ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথগ্রহণের জন্য রাজ্যপালকে চিঠি দিতে পরিষদীয়মন্ত্রীকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। ফাইল চিত্র।

ধূপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়ের শপথের বিষয়ে পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি দিতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিকেলে নিজের পায়ের চিকিৎসা করাতে এসএসকেএম হাসপাতালে যান তিনি। সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে কালীঘাটের বাড়িতে ফিরলে তাঁকে ফোন করেন পরিষদীয়মন্ত্রী। কী কারণে ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথগ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না, তা বিস্তারিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান পরিষদীয়মন্ত্রী। কার্যত অভিযোগের সুরেই মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। কী ভাবে তাঁর দফতরে এড়িয়ে বিধায়কের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চেয়েছিল রাজভবন তাও মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়।

Advertisement

তারপরেই শোভনদেবকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ‘‘অবিলম্বে রাজ্যপালকে চিঠি দিন। বলুন বিধায়ক শপথ না নিতে পারলে এলাকার মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবে।’’ ১২ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ সফরে যান। তারপর থেকেই শপথগ্রহণ ঘিরে দড়ি টানাটানি চলেছে পরিষদীয় দফতর ও রাজভবনের মধ্যে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর শোভনদেব বলেন, ‘‘আমি যত দ্রুত সম্ভব চিঠি দিচ্ছি। রাজ্যপাল বিদেশ যাচ্ছেন। এই চিঠি তার আগেই যাতে রাজ্যপালের হাতে পৌঁছয় সেই চেষ্টা করব। চিঠির খবর তিনি পাবেনই। চাইলে তিনি স্পিকারকে শপথ নেওয়ার কথা বলে দিতে পারেন। এ বার চিঠি দিয়ে রাজ্যপালকে জানাব নির্মল ধূপগুড়ির নির্বাচিত প্রতিনিধি। তাঁর শপথগ্রহণ আটকে থাকায় এলাকায় পরিষেবা ব্যহত হচ্ছে। আমি আগেও আপনাকে চিঠি দিয়েছিলাম। অবিলম্বে শপথের ব্যবস্থা করা হোক।’’ সোমবার দিল্লি রওনা হচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মঙ্গলবার সেখান থেকেই আমেরিকায় যাবেন তিনি। কলকাতায় ফিরতে পারেন ৭ অক্টোবর। তাই সোমবারের মধ্যে রাজভবন নির্মলচন্দ্রর শপথে সায় না দিলে তা আরও কিছুদিন পিছিয়ে যেতে পারে। তাই দ্রুত রাজভবনের অনুমতি পেতে রাতেই পরিষদীয় দফতরের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।

উল্লেখ্য, ৮ সেপ্টেম্বর উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন নির্মলচন্দ্র। কিন্তু রাজভবন-নবান্নের সংঘাতের কারণে তাঁর শপথগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। শনিবার উপনির্বাচনে জয়ী বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য রাজভবনের তরফে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়নি। পরিষদীয় দফতরের অভিযোগ, রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে গিয়ে একক ভাবে বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করানোর আয়োজন করেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু পরিষদীয় দফতর সায় না দেওয়ায় সেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি রাজভবনের তরফে। পরিষদীয় দফতরের অভিযোগ, কোনও বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাতে হলে পরিষদীয় দফতরের ফাইলে রাজভবনের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। সেই ফাইল ফিরে এলে দফতরের তরফেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

Advertisement

পরিষদীয় দফতরের অভিযোগ ছিল, রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে নিজেই রাজভবনে বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। এ ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত ত্রুটি থাকায় শপথবাক্য পাঠ করানো সম্ভব হয়নি। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আবারও তিনি ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথ অনুষ্ঠানের জন্য চিঠি পাঠাবেন রাজভবনে। অনুমোদন পেলে পরিষদীয় দফতরই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যপাল কেবলমাত্র ঠিক করতে পারেন, কে বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাবেন। কোনও ক্ষেত্রে রাজ্যপাল নিজে শপথবাক্য পাঠ করাতে পারেন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট বিধানসভার স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারকে। উল্লেখ্য, জগদীপ ধনখড় বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন উপনির্বাচনে জয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিধানসভায় এসে নিজেই শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন। আবার বর্তমান রাজ্যপাল বাবুল সুপ্রিয়কে শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পর জটিলতা কাটতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement