ব্যস্ত কুমোরপাড়া, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রতিমা সজ্জা। কাজের ফাঁকেই সেখানে ঢুঁ মারলেন নায়িকা। পরনে ঘিয়ে রঙা শাড়ি, গলায় সোনার হার-নেকলেস। সিঁথিতে উঁকি দিচ্ছে সিঁদুর। আর ঠোঁটে এক্কেবারে শ্রাবন্তীসুলভ হাসি! পুজোর সাজে তৈরি অভিনেত্রী!
পুজো তো এসেই পড়ল, কেমন অনুভূতি হচ্ছে? জিজ্ঞেস করতেই একগাল হেসে উত্তর, "আকাশে-বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ। এই সময়টায় সব থেকে ভাল লাগে শরতের আকাশ দেখতে।"
কর্মজীবনে দীর্ঘ সময়ে পার করে ফেলেছেন নায়িকা। নায়িকা হওয়ার আগে কেমন ছিল শ্রাবন্তীর মেয়েবেলা? আজও কি মনে পড়ে সেই সময়ের পুজোর প্রেম? এবার পুজোয় কী করবেন, কী খাবেন, কেমন সাজবেন, আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে সবটা নিয়েই খোলামেলা আড্ডায় শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়।
কুমোরটুলির মাটির গন্ধ মাখলেন। শিল্পীদের কাজ দেখে একেবারেই অভিভূত নায়িকা। কাজের বাইরে কুমোরটুলিতে কি এর আগেও আসা হয়েছে? কিছুটা আবেগে গা ভাসিয়েই শ্রাবন্তী বললেন, "আমি আগেও এসেছি। কুমোরটুলিতে এলেই মনে হয় দুর্গাপুজো চলে এসেছে। ঢোকার মুখে শিল্পীদের দেখলাম, কেউ মায়ের চক্ষুদান করছেন, কেউ অস্ত্র দিচ্ছেন।মনে হচ্ছিল স্তব্ধ হয়ে দেখেই যাই শুধু।"
প্রতিমার সাজের পাশাপাশি প্রতি বারই নজরকাড়া শ্রাবন্তীর পুজোর সাজ। এ বারে কেমন সাজবেন ভেবেছেন? শ্রাবন্তী জানান, তাঁর কাছে পুজো মানেই সাবেক সাজ। নায়িকার কথায়, "এমনিতে খুব একটা শাড়ি পরা হয় না। পুজোর সময়ে তাই নিজেকে শাড়িতে দেখতেই ভালবাসি। বিশেষত অষ্টমীর সকাল-সন্ধে পুরো সময়টাই শাড়ি। নিজেকেই প্রতিমার মতো সাজিয়ে তুলি।"
শ্রাবন্তী কি মিস করেন তাঁর মেয়েবেলাকে? কোন জিনিসটা পাল্টেছে? অভিনেত্রী বলেন, "এখন অনেক কিছু চিন্তাভাবনা করে চলতে হয়। ছোটবেলায় সেই ভাবনাটা ছিল না।"
সেই সময়ের পুজোর প্রেমের কথা মনে পড়ে? শুনেই একগাল হাসি। বললেন, "ছোটবেলায় অনেক প্রস্তাব পেয়েছি। একই মণ্ডপে দু'জনের যাওয়া, প্রতিমার সঙ্গে আমার তুলনা শুনেছি। তোমায় দুর্গা প্রতিমার মতোই দেখতে— এর থেকে বড় প্রশংসা আর কী হতে পারে!"
বিগত বছরগুলির তুলনায় এই বছরের পুজোর আমেজটা একটু আলাদা। শরতের আকাশে হঠাৎ কালো মেঘের আনাগোনার মতো এ বছর উৎসবের মাঝেও মানুষের মন ভার।
আরজি কর-কাণ্ডের কথা মনে পড়লেই মন খারাপ হয়ে আসে শ্রাবন্তীর। তবে কিছু মানুষের রোজগারের কথা মাথায় রেখেই উৎসবে শামিল হওয়ার কথা বলছেন অভিনেত্রী।
"এক জন মেয়ে হিসেবে তো বটেই, তা ছাড়া সাধারণ মানুষ হিসেবেই চাইছি এর বিচার। তবে পুজোটা অনেকের কাছেই রুটিরুজির বিষয়। ঢাকি, প্রতিমাশিল্পী থেকে শুরু করে ফুচকাওয়ালা— সারাটা বছর তাঁরা তাকিয়ে থাকেন এই কয়েকটা দিনের দিকে। তাঁদেরও জীবনযাপন করতে হবে। আমি মনে করি উৎসবের সঙ্গে বিচারের জন্য লড়ে যেতে হবে," বললেন শ্রাবন্তী।