সিপিএমের সঙ্গে চলার পক্ষপাতী নন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পর সিপিএমের মতো বাম দলকে সামাজিক ভাবে বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ২০১১ সালের তাঁর সেই স্লোগান আজও প্রযোজ্য বলে মন্তব্য করলেন অধুনা রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয়। সিপিএমকে ‘ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক’ দল বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। তবে, জ্যোতিপ্রিয়র মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব। উল্টে তৃণমূল সরকারকেই দুর্নীতিপরায়ণ বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।
শনিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়া ১ নম্বর ব্লক অফিসে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ পরিষেবা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। সেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানে বারো বছর আগেকার নিজের পুরনো স্লোগানের প্রসঙ্গ তোলেন জ্যোতিপ্রিয়। বলেন, ‘‘২০১১ সালের নভেম্বরে একটা স্লোগান দিয়েছিলাম, ‘সিপিএমের সঙ্গে চলব না। তার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক তৈরি করব না। তারা কোনও বিয়েবাড়ি গেলে যাব না।’ সেটা আজও খুবই প্রযোজ্য। আমি সিপিএমের সঙ্গে চলার পক্ষপাতী নই। এরা ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক দল।’’
বাম আমলে ৪৬ হাজার নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে বলে শুক্রবার দাবি করেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তৃণমূলের আমলে দুর্নীতি নিয়ে কেন আলোচনা হচ্ছে, সে প্রশ্ন তুলেন ব্রাত্য বলেছিলেন, ‘‘বাম আমলেও তো ৪৬ হাজার নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে বলে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ক্যাগ (কম্পট্রোলার অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া)-এর রিপোর্টে।’’ শনিবার ব্রাত্যর সুরেই সুর মিলিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। তাঁর কথায়, ‘‘এরা (সিপিএম) কী করে গিয়েছে, তা গত কয়েক দিন ধরে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছ থেকে শোনা যাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি সমস্ত দফতরের তদন্ত করেন, তবে সিপিএমের নেতাদের যে কী হাল হবে, তাঁরা বুঝতে পারছেন না। শিক্ষা দফতর দিয়ে শুরু হয়েছে। অডিটর জেনারেল বলছে, ৪৬ হাজার নাম বেরিয়েছে। সত্য তো উদ্ঘাটন করা উচিত। এ সব জনসমক্ষে নিয়ে আসা উচিত।’’
এই বাম দলটির অস্তিত্ব নেই বলেও মন্তব্য করেছেন জ্যোতিপ্রিয়। তাঁর দাবি, ‘‘সিপিএম দলটি শেষ হয়ে গিয়েছে। সিপিএমের যে মুখগুলো টিভিতে দেখা যায়, সেগুলো পচে গিয়েছে। (সিপিএমে) নতুন মুখ চাই।’’
জ্যোতিপ্রিয়র মতামতকে নস্যাৎ করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের থেকে এর থেকে ভাল কিছু কথা আর কী আশা করা যায়? এঁরা অসামাজিক। এঁরা শুধু দুর্নীতিপরায়ণই নন, অসামাজিক।’’ তৃণমূল সরকারের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘১১ বছরের দুর্নীতিতে কারও কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারলেন না কেন? ওঁদের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ তো কোর্টে প্রমাণিত হবে। মিথ্যে মামলা-মোকদ্দমা কম দেননি। ওতে আমরা ভয় পাই না।’’