ব্রাত্য বসু। ফাইল চিত্র।
হলদিয়ার সভা থেকে মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারীর ‘বহিরাগত’ও ‘দলতন্ত্র’ কটাক্ষের জবাব দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বিজেপি ‘বহিরাগত’ তত্ত্বের ভুল ব্যাখ্যা করছে বলেও জানান তিনি। তাঁর মতে, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের যে বিস্তার ঘটেছে, সেখানে অবাঙালিদের একটা ভূমিকা আছে। জ্ঞানসিংহ সোহনপাল, বিড়লা পরিবার, গোয়েঙ্কা পরিবারের যে অবদান রয়েছে বাংলার জন্য, তা আমরা ভুলতে পারি না। তবে বহিরাগতদের সঙ্গে তাঁদের পার্থক্য রয়েছে। এঁরা প্রত্যেকেই ভাল বাংলা বলতে পারেন। কিন্তু বহিরাগতরা বাংলা ভাষাকে ঘৃণা করেন।’’
মঙ্গলবার হলদিয়ায় শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামী সতীশ সামন্তকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু সমীহ করতেন। সতীশ সামন্ত, নেহরুকে কোনওদিন বহিরাগত বলেননি। আর নেহেরুও, সতীশ সামন্তকে অ-হিন্দিভাষী মনে করতেন না। আমাদের সকলের আগে পরিচয় আমরা ভারতবাসী, তারপরে বাঙালি।’’ শুভেন্দুর ওই কথার প্রেক্ষিতেই সরব হন ব্রাত্য। তবে শুভেন্দুকে আক্রমণ না করে বিজেপি-র সমালোচনা করেন তিনি। ব্রাত্য প্রশ্ন তোলেন, ‘‘বাংলাকে ১০টি জোনে ভাগ করেছে বিজেপি। ১০ জন পর্যবেক্ষক বসিয়েছে। সেখানে কোনও ভূমিপুত্র নেই কেন? সম্প্রতি বিহারে নির্বাচন হল। এ রাজ্যে যাঁরা বিজেপি, আরএসএস করেন তাঁদের এক জনকেও কেন সেখানে পাঠানো হল না? এত বাংলাবিদ্বেষ কেন? নিরামিষাশী নয় বলে? মাছ-মাংস খায় বলে?’’ ব্রাত্যের দাবি, বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে মাছ-মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেবে।
তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্বের ব্যাখ্যা দিয়ে ব্রাত্য আরও বলেছেন, ‘‘বহিরাগত বলতে আমরা সেই সব লোককে বলছি, যাদের এখানে পাঠানো হয়েছে। এমন বর্গি, হানাদারদের পাঠানো হচ্ছে, যারা বাংলা বলতে চায় না। বাঙালি সংস্কৃতি জানে না। রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান বোলপুর বলে। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙে।’’ তাঁর দাবি, তৃণমূল জমানায় অনেক অবাঙালিরা এ রাজ্যে আনন্দে, শান্তিতে ও নিরাপদে আছেন।
শুভেন্দুর ‘দলতন্ত্র’ সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়েও মঙ্গলবার বিজেপি-র কড়া সমালোচনা করেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিজেপি-র মতো ফ্যাসিস্ট পার্টি নয়। আমাদের দলের একজন কর্মী গেলেও আমাদের ক্ষতি। যশবন্ত সিন্হা একটা বই লিখেছিলেন। বিজেপি তাঁকে বার করে দিয়েছে। শত্রুঘ্ন সিনহা, অরুণ শৌরিকে দল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। লালকৃষ্ণ আডবাণী জিন্নার প্রশংসা করেছিলেন তাঁকে দলে কোণঠাসা করা হয়েছে। এটা কি দলীয় গণতন্ত্রের নমুনা।’’