জোড়া হুমায়ুনের মন্তব্যের পর শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন তৃণমূল পরিষদীয় দলের। — ফাইল চিত্র।
শুক্রবার বিধানসভায় ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়েছিল শাসকদল। তার আগে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের প্রকাশ্যে দলবিরোধী মন্তব্য করা নিয়েও চটেছিলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই বিধায়কদের শৃঙ্খলার পাঠ পড়াতে পরিষদীয় দলের মধ্যেই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন করল তৃণমূল। সোমবার বিধানসভায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অধিবেশনের প্রথমার্ধে প্রশ্নোত্তরপর্বে অংশ নেওয়ার পর অবকাশ পর্বে মুখ্যমন্ত্রী যান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে। সেখানে একে একে হাজির হন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতন নির্মল ঘোষ ও তৃণমূল পরিষদীয় দলের উপমুখ্যসচেতক তাপস রায়। বিধানসভা সূত্রে খবর, সেখানেই বিধানসভার অধিবেশনের কাজকর্ম নিয়ে কথা হয় তাঁদের মধ্যে। এই বৈঠক শেষের পর জানা যায় পরিষদীয় দলের সদস্যদের শৃঙ্খলার পাঠ পড়াতে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি করা হচ্ছে। এই কমিটির চেয়ারম্যান হচ্ছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব।
এই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। কমিটি গঠন প্রসঙ্গে শোভনদেব বলেন, ‘‘আমাদের সংসদীয় দলে এমন কমিটি রয়েছে। পরিষদীয় দলের ক্ষেত্রে এমন কমিটি ছিল না, এ বার থেকে তা করা হল। শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়েই বিধায়কদের সঙ্গে কাজ করব আমরা।’’ তবে তৃণমূল পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, পরিষদীয় দলকে অন্ধকারে রেখে প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন যে ভাবে লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে সংখ্যালঘু মহিলাদের ১০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা বলেছেন, তাতে বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছিল তৃণমূল পরিষদীয় দল। তার পরেই দলের প্রশ্নের মুখে পড়েন হুমায়ুন। ওই দিনই তাঁকে তৃণমূলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, এ বার থেকে কোনও প্রশ্ন করতে গেলে তার অনুমোদন নিতে হবে পুরমন্ত্রী ফিরহাদের থেকে।
কিন্তু দলের সব বিধায়ককে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে নতুন এই কমিটি গড়া হল। বিধানসভা সূত্রে খবর, এ বার থেকে বিধায়করা বিধানসভায় যা-ই বলবেন তা এই কমিটির অনুমোদন নিয়ে বলতে হবে। ডেবরার বিধায়কের পাশাপাশি, ইদানীং ভরতপুরের বিধায়ক ও ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী নানা মন্তব্য করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন। যদিও, শনিবার ভরতপুরের বিধায়ককে শোকজের চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। তার পরেই দলীয় বিধায়কদের মুখে লাগাম পরাতে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন করল তৃণমূলের পরিষদীয় দল।