উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার এক গ্রামে বিধায়কের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
‘দিদির দূতদের’ ঘিরে ক্ষোভ-বিক্ষোভে রাশ পড়েনি এখনও। প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তৃণমূল নেতৃত্বের স্কুলে পৌঁছনো নিয়েও।
সোমবার বীরভূমে বিক্ষোভ এড়াতে তৃণমূল বিধায়ক অনেক গ্রামে যাননি বলে অভিযোগ। বোলপুরের সিঙ্গি গ্রাম এলাকায় ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ কর্মসূচিতে এ দিন যান নানুরের বিধায়ক বিধানচন্দ্র মাঝি। অভিযোগ, বিক্ষোভের আশঙ্কায় তিনি গ্রাম না ঘুরেই এক কর্মীর বাড়িতে চলে যান। পরে পঞ্চায়েত অফিসে গেলে সেখানে গ্রামবাসীর অনেকে নানা বিষয়ে ক্ষোভ জানান। বিধায়কের অবশ্য দাবি, “গ্রামই আমি ঘুরেছি।’’ তিনি ওখানে বাঁধ পরিদর্শনে যান। তবে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলতে চাননি। স্থানীয় সূত্রে দাবি, তখন এক তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘বাঁধ না থাকুক, বালিটা থাকলে পার্টিটা চলবে!’’ এই বক্তব্য ঘিরে বিড়ম্বনায় পড়েছে শাসকদল।
একই রকম ভাবে দিদির দূতেরা বিড়ম্বনায় পড়েছেন উত্তরবঙ্গের একাধিক জায়গাতেও। মালদহের দুই মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও তজমুল হোসেন, জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, কোচবিহারের জেলা সভাধিপতি উমাকান্ত বর্মণকেও বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবা নিয়ে জনতার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।
আবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের গাড়ি থামিয়ে এ দিন রাস্তা সংস্কারের দাবি তোলেন আষাঢ়ু পঞ্চায়েতের মানুষজন। দ্রুত রাস্তা পাকা করার আশ্বাস দেন বিশ্বজিৎ।
তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা স্কুলেও যাচ্ছেন। দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ এ দিন গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির বিধাননগর মুরলিগছ হাই স্কুলে। ক্লাসে ঢুকে খোঁজ নেন, ছাত্রীরা ‘কন্যাশ্রী’ পাচ্ছে কি না। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রও একাধিক স্কুলে যান। বল্লুক হাই স্কুলের পড়ুয়াদের কাছে জানতে চান, তারা সবুজসাথীর সাইকেল, কন্যাশ্রীর সুবিধা পাচ্ছে কি না। অভিযোগ, দলীয় পতাকা লাগানো টোটো নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও সৌমেনের দাবি, ‘‘বিধায়ক হিসাবেই গিয়েছিলাম। স্কুলে রাজনীতির অভিযোগ ঠিক নয়।’’
এ দিনই ইলামবাজারের নানাশোল পঞ্চায়েতে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের সামনে আদিবাসীরা আবাসে বাড়ি, সরকারি পরিষেবা না পাওয়া, রাস্তাঘাট নিয়েও মন্ত্রীকে ক্ষোভ জানান। পরে মন্ত্রীর দাবি, “ক্ষোভ-বিক্ষোভ তেমন কিছু নেই। সাধারণ মানুষ তাদের অভাব অভিযোগ জানাতে পারছেন, আগে যেটা পারতেন না।’’ বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল পাল্টা বলেন, ‘‘তৃণমূলের মন্ত্রী-নেতাদের পিঠে কুলো বেঁধে যেতে বলব। এখন সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। পরে হয়তো এটা আরও একধাপ বাড়বে।’’