বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের লাড্ডু খাওয়াচ্ছেন তৃণমূল কাউন্সিলর রমাপ্রসাদ হালদার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগে সরব বিজেপি। এমন এক ‘আবহেই’ মিষ্টিমুখ করিয়ে বিজেপি সমর্থক ও কর্মীদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করলেন পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা ২ নম্বর বরো চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ হালদার। যদিও বিজেপি এই ঘটনাকে আমল দিতে নারাজ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ মে ভোটের ফলপ্রকাশের পরে, দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ওই ওয়ার্ডের প্রায় একশোটি পরিবারের মূলত যুবক সদস্যেরা বাড়ি ছেড়ে শহরে ও শহরের বাইরে বিভিন্ন আত্মীয়দের বাড়িতে চলে যান। বিষয়টি পাড়া সূত্রে ও পরিবারগুলির অভিভাবকদের থেকে জানতে পারেন রামপ্রসাদবাবু। এর পরেই তিনি সক্রিয় হন। রমাপ্রসাদবাবু জানান, তিনি নানা জায়গায় লোকজন পাঠিয়ে ও পরিবারের সদস্যদের ফোন থেকে ওই যুবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অভয় দেন, ‘‘ফিরে এসো। আমি আছি। ভয় নেই।’’ প্রত্যেককে বৃহস্পতিবার সকালে ওয়ার্ডেরই এক জায়গায় আসতে বলেন।
এর পরে বৃহস্পতিবার ওই যুবকেরা এলাকায় ফিরে রমাপ্রসাদবাবুর কথা মতো জড়ো হন। রমাপ্রসাদবাবু তাঁদের লাড্ডু খাইয়ে স্বাগত জানিয়ে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে প্রত্যেকের বাড়িতে যান। সকলকে বাড়ি ফিরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভোটের ফল বেরোনোর পরে, বিজেপি কর্মীরা ভেবেছিলেন, আমাদের কেউ-কেউ সাময়িক রাগের কারণে হয়তো তাঁদের উপরে চড়াও হবেন। এই আতঙ্কে ওই যুবকেরা এলাকা ছাড়েন। এ দিন ঘরের ছেলেরা ঘরে ফিরেছেন।’’
বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি তাপস মাইতি, রবীন্দ্র সরকারের মতো বিজেপি কর্মী ও তাঁদের পরিবারগুলি। তাপস বলেন, ‘‘অশান্তি ও হামলার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছিলাম। কাউন্সিলর ফিরিয়ে আনলেন।’’ রবীন্দ্রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ফল ঘোষণার পরে রাজ্য জুড়ে যা শুরু হয়েছে, তাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তাই এলাকা ছেড়েছিলাম। কাউন্সিলর অভয় দেওয়ায় বাড়ি ফিরেছি।’’
তবে বিষয়টিকে আমল না দিয়ে ওই কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্য জুড়ে বিরোধীদের উপরে ভয়াবহ অত্যাচার চালাচ্ছে তৃণমূল। পুলিশ-প্রশাসন নির্বিকার। তাই এটা লোক দেখানো ছাড়া, আর কিছু নয়।’’ যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রমাপ্রসাদবাবু এর আগেও ‘সৌজন্যের দৃষ্টান্ত’ দেখিয়েছেন। ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে বরো অফিসে স্মারকলিপি দিতে আসা সিপিএম নেতৃত্বকে লাল গোলাপ দিয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন তিনি।