রবিবার সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিলেন তৃণমূল নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলকে হেনস্থা করার জন্যই ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় দলের নেতা-কর্মীদের তলব করছে সিবিআই। এমন অভিযোগ করলেন বর্ধমানের আউশগ্রামের গুসকরা ২ নম্বর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি তাপস চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে তৃণমূলকে ভয় দেখানো হচ্ছে। তবে এ ভাবে তৃণমূলকে দমানো যাবে না। যদিও সিবিআইয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করার কথা বলেছেন তিনি।
‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ মামলায় রবিবার সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিলেন তৃণমূল নেতা তাপস চট্টোপাধ্যায়। সকাল ১০টা নাগাদ দুর্গাপুরে এনআইটি অতিথিশালায় সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে আসেন তিনি। সেখানে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। ওই শিবির থেকে বেরিয়ে তাপস বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলকে চিনি কি না, তা জানতে চান সিবিআই আধিকারিকেরা। আমি জানিয়েছি, অবশ্যই চিনি। অনুব্রত মণ্ডল আমাদের নেতা এবং অভিভাবক।’’
প্রসঙ্গত, বর্ধমানের আউসগ্রাম, মঙ্গলকোট এবং কেতুগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার পর্যবেক্ষক বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে ২ জুন এই মামলায় তলব করে সাড়ে ৫ ঘণ্টার ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। এর পর অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত লাভপুরের বিধায়ক অভিজিত্ সিংহ ওরফে রানা এবং কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজকেও তলব করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি।
রবিবার তাপস জানিয়েছেন, ২ জুন হোয়াটসআ্যপের মাধ্যমে তাঁকে নোটিস পাঠিয়েছিল সিবিআই। তাতে বলা হয়েছিল, ৫ জুন সকাল ১০টার মধ্যে দুর্গাপুরের এই শিবিরে হাজিরা দিতে হবে। যদিও তাপসের দাবি, ‘‘গত বছরের ২ মে আমি অনুব্রত মণ্ডলকে ফোন করেছিলাম কি না, তা জানতে চেয়েছিল সিবিআই। আমার কল-লিস্ট থেকে অনুব্রতের নম্বর পাওয়া গিয়েছে। সেই দিন আমার কাছে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চেয়েছিল সিবিআই। তা দিয়েছি। তার পর হাজিরার নোটিস পাঠিয়েছে তারা।’’ রবিবার তাপস এ-ও বলেন, ‘‘গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিন অনুব্রতকে কেন ফোন করেছিলাম, তার কারণ জানতে চান সিবিআই আধিকারিকেরা। ওই নির্বাচনে দলের প্রার্থী ছিলেন অভেদানন্দ থাণ্ডার। আমি নির্বাচনে এজেন্ট ছিলাম। সুতরাং ভোটের ফল কী হল, সে বিষয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে মোবাইলে জানিয়েছিলাম। সিবিআইকে জানিয়েছি, আমি অনুব্রত মণ্ডলকে ফোন করেছিলাম। যে হেতু তিনি (অনুব্রত) আমাদের অবর্জাভার।’’
একের পর তৃণমূল নেতা-কর্মীদের তলব করার পিছনে সিবিআইয়ের ‘অন্য উদ্দেশ্য’ রয়েছে বলে দাবি তাপসের। তাঁর দাবি, ‘‘এজেন্সি দিয়ে আমাদের মতো তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে, যাতে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে আমরা সামনে থেকে লড়াইয়ে অংশ না নিতে পারি। তবে এ ভাবে এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখিয়ে কিছু হবে না।’’ তাপসের কথায়, ‘‘আমাদের হেনস্থা করা হচ্ছে, যাতে তৃণমূলকে দমানো যায়। আমরা যে হেতু তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী, অঞ্চল সভাপতি... তবে আমাদের ভয় দেখিয়ে রুখতে পারবে না। সিবিআই আবার ডাকলে আসব। সহযোগিতা করব।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।