শিশির-দিব্যেন্দুকে কড়া চিঠি সুদীপের। নিজস্ব চিত্র।
দলের নির্দেশ অমান্য করে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন তৃণমূলের দুই সাংসদ। তাঁরা আবার অধিকারী পরিবারের দুই সদস্য। পিতা শিশির অধিকারী কাঁথির সাংসদ। আর পুত্র দিব্যেন্দু অধিকারী তমলুকের সাংসদ। শনিবার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাঁরা দু’জনেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ উপেক্ষা করে ভোট দিয়েছেন। যা দলবিরোধী কাজের সামিল বলেই মনে করছে তৃণমূল সংসদীয় দল। তাই তৃণমূল লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দিয়ে কারণ জানাতে বললেন সাংসদ পিতাপুত্রকে।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায় গত বৃহস্পতিবার সাংসদ পিতাপুত্রকে পৃথক ভাবে চিঠি দিয়ে ভোটদানে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন সুদীপ। কিন্তু সেই নির্দেশ না মেনে শিশির-দিব্যেন্দু দিল্লি গিয়ে ভোট দিয়েছেন। চিঠিতে সুদীপ লিখেছেন, ‘৪ অগস্ট জানানো হয়েছিল যে দলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকবেন। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, আপনি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, ২১ জুলাই কালীঘাটে নিজের বাসভবনে দলের সাংসদদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনই তৃণমূলের সবর্ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভার দলনেতাকে পাশে নিয়ে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই মতো সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়া বেশ কয়েক জন তৃণমূল সাংসদ শনিবার দিল্লিতে থাকলেও ভোট দিতে যাননি। উল্লেখ্য, এই সময়ে তৃণমূল সুপ্রিমোও রাজধানীতেই রয়েছেন। সেই সময়ে দুই তৃণমূল সাংসদের দলীয় নির্দেশ অমান্য করার ঘটনাকে কোনও ভাবেই মানতে পারছে না তৃণমূল। সে কারণেই সুদীপ কড়া ভাষায় চিঠি পাঠিয়েছেন শিশির-দিব্যেন্দুকে।
দলের তরফ থেকে দেওয়া চিঠির কোনও উত্তর দেবেন কি? তা জানতে দিব্যেন্দুর মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। যদিও এই প্রসঙ্গে শনিবার অধিকারী ঘনিষ্ঠরা জানান, রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনও দলই হুইপ জারি করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে ওঁরা ভোট দিয়ে কোনও অন্যায় করেননি।
শিশির-দিব্যেন্দু তৃণমূলের সাংসদ হলেও, দলের সঙ্গে তাঁদের বিশেষ যোগাযোগ নেই। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই দূরত্ব তৈরি হয়। আবার শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আবেদন জানিয়ে রেখেছে তৃণমূল সংসদীয় দল। উল্লেখ্য, এর আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও দলকে না জানিয়ে দিল্লিতে ভোট দিতে গিয়েছিলেন শিশির ও দিব্যেন্দু। যদিও দল সব সাংসদকেই কলকাতায় ভোট দিতে বলেছিল।