শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবু (বাঁ দিকে)। বসিরহাট থানা। —নিজস্ব চিত্র।
গ্রেফতার করার পর বসিরহাট থানায় নিয়ে আসা হয়েছে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরা ওরফে শিবুকে। শেখ শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ সন্দেশখালির এই নেতা ‘পলাতক’ ছিলেন। শনিবার ন্যাজাট থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। রবিবারই তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করানো হবে।
তবে আদালতে হাজির করানোর আগে কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে শিবুকে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি থেকে সাধারণ মানুষ, কাউকেই থানার ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। বন্ধ করে রাখা হয়েছে থানার মূল ফটক। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, থানায় অভিযোগ জানাতে এসেও বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকেও গ্রেফতার করে বসিরহাট থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে জেলার রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, সেই সময় এত কড়াকড়ি না হয়ে থাকলে শিবুর বেলায় কেন এই ‘অতিসক্রিয়তা’ দেখাচ্ছে পুলিশ?
বস্তুত, সন্দেশখালি-২ ব্লকের সভাপতি শিবুর নাম উঠে আসে শাহজাহানের সূত্র ধরে। গত ৫ জানুয়ারি শাহজাহানের বাড়িতে ইডির তল্লাশি করতে যাওয়া এবং আধিকারিকদের আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আর দেখা মেলেনি তৃণমূল নেতার। তাঁর সঙ্গে সঙ্গে শিবুও ‘নিখোঁজ’ ছিলেন। এর মধ্যে শিবুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছেন সন্দেশখালির স্থানীয় মহিলাদের একাংশ। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ওই তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগে গর্জে ওঠে সন্দেশখালি। ভাঙচুর চলে জেলা পরিষদের সদস্য তথা তৎকালীন অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি উত্তমের বাড়ি। পর দিন ভাঙচুর করা হয় শিবুর বাগানবাড়ি এবং মুরগির খামার। আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয় ওই খামারে।
শুক্রবারই সন্দেশখালিকাণ্ডে গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার ধারা যোগ করেছে পুলিশ। তাতে অভিযুক্ত হিসাবে নাম রয়েছে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার এবং তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদের। পাশাপাশি, খুনের চেষ্টার ধারাতেও মামলা রুজু হয়েছে। তার পরই সন্ধ্যার দিকে গ্রেফতার হন শিবু। গ্রেফতারির পর বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘ন্যাজাট থানা এলাকা থেকে শিবপ্রসাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামিকাল (রবিবার) তাঁকে আদালতে হাজির করানো হবে।’’