—প্রতীকী ছবি।
বছর শেষে ডলারের নিরিখে কমেই চলেছে টাকার দাম। শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন ৮৫.৮১-তে নেমে যায় দর। ডলারের তুলনায় টাকার দামের এই পতনের প্রভাব পড়েছে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে। ডিসেম্বরের ২০ তারিখ পর্যন্ত এতে ৮৫০ কোটি ডলার খুইয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। ফলে বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৪৩৯ কোটি ডলার। গত সাত মাসের নিরিখে এই অঙ্ক সর্বনিম্ন। যদিও এই টাকায় আগামী ১১ মাসের আমদানি অনায়াসেই করতে পারবে কেন্দ্র, বলছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর বিদেশি মুদ্রা ভান্ডারের সাপ্তাহিক তথ্য প্রকাশ করে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। সেখানে বলা হয়েছে, এক সপ্তাহে উবে গিয়েছে ৮৪৭.৮০ কোটি ডলার। গত এক মাসের মধ্যে এই পতনকে সর্বাধিক বলে জানিয়েছে আরবিআই। এর আগের দুই সপ্তাহে ৫২০ কোটি ডলার হারায় ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। পর পর তিন সপ্তাহ বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার এ ভাবে কমায় অর্থ মন্ত্রকের পদস্থ কর্তাদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ।
২২ নভেম্বরের শেষ হওয়া সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি ডলার হাতছাড়া হয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের। ওই সময়ে সাত দিনে ১,৭৮০ কোটি ডলার হারিয়েছিল আরবিআই। টাকার দামের পতন আটকাতে ক্রমাগত ডলার বিক্রি করে চলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত ৫,০০০ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে বলে বিদেশি মুদ্রা ভান্ডারের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অক্টোবরে অফশোর মার্কেট ইউনিটকে বাঁচাতে ৪,৯০০ কোটি ডলার হাতছাড়া করেছে আরবিআই। মুদ্রা ভান্ডারের রিপোর্টে অবশ্য এই তথ্য রাখেনি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।
আরবিআই জানিয়েছে, ডলার বাদ দিয়ে অন্যান্য বিদেশি মুদ্রা সম্পদের অবমূল্যায়নের প্রভাবও বিদেশি মুদ্রা ভান্ডারের উপর পড়েছে। এর জেরে হাতে থাকা বিদেশি মুদ্রার মূল্য ৫৫,৬৫৬.২০ কোটি ডলার থেকে কমে ৬০১.৪০ কোটি ডলারে চলে এসেছে। কারণ ডলার শক্তিশালী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরো, পাইন্ড বা ইয়েনের মতো বিদেশি মুদ্রাগুলির দরের ক্ষেত্রেও পতন দেখা গিয়েছে।
এ মাসের ২৭ তারিখ ডলারের তুলনায় তিন শতাংশ কমেছে ভারতীয় টাকার দাম। গত সাত মাসের মধ্যে টাকার এটাই সর্বোচ্চ পতন। এই নিয়ে টানা ন’দিন ডলারের তুলনায় টাকার দরকে নিম্নমুখী থাকতে দেখেছে আরবিআই। এর আগে ডলারের নিরিখে টাকার দামের বড় পতন হয়েছিল ৪ জুন। বছর শেষে ডলারের তুলনায় টাকার দাম ৮৬-তে গিয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বিদেশি মুদ্রা ভান্ডারের পরিমাণ আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে।