নুসরত জাহান এবং সায়নী ঘোষ। ছবি: পিটিআই এবং ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালি বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহানের। প্রায় দেড় মাস ধরে উত্তপ্ত থাকা সন্দেশখালিতে সাংসদ নুসরতের অনুপস্থিতি চোখে পড়েছিল বিরোধীদের। এলাকাবাসীর কাছে যখন তাঁর প্রয়োজন সব থেকে বেশি, তখন বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের এই দ্বীপাঞ্চলে পা পড়েনি তাঁর। সেই নিয়ে এ বার নুসরতকে খোঁচা দিলেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে সায়নী বলেন, “এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসাবে তাঁর সেখানে যাওয়া দরকার ছিল।”
বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের পাটুলিতে ব্রিগেড সমাবেশের সমর্থনে দলীয় সভায় এসেছিলেন সায়নী। তাঁর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন নব্যনির্বাচিত তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ, সুস্মিতা দেব এবং স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। সেই সভায় সায়নী বলেন, “নুসরত জাহানের সন্দেশখালির মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল। এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর সেখানে যাওয়া দরকার ছিল। তবে তিনি যে হেতু নির্বাচিত, তাই নিজের কেন্দ্রে যাবেন কিনা সেটা তাঁর সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার।” সায়নী আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সন্দেশখালির মানুষের জন্য অনেক করেছেন। সেখানকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে এখনও বলছি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের কেন্দ্রে যাওয়া সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। তবে এটাও ঠিক যে ওঁর বসিরহাটে যাওয়া উচিত ছিল।”
প্রসঙ্গত, ৫ জানুয়ারি মাসের রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্তে সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে তাঁর বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হতে হয় ইডি আধিকারিকদের। তা নিয়ে উত্তাল হয়েছিল বঙ্গ রাজনীতি। ক্রমে তা আলোড়িত করেছিল জাতীয় রাজনীতিকেও। এর পর একে একে শাহজাহান-সহ তৃণমূলের সন্দেশখালির দাপুটে নেতারা বেপাত্তা হতে শুরু করলে জনবিক্ষোভের ঘটনা ঘটতে থাকে গ্রামগুলিতে। মহিলাদের সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিবাদ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ সংবাদের শিরোনামে উঠে আসে। দীর্ঘ সময় ধরে সন্দেশখালি প্রসঙ্গে নীরব ছিলেন নুসরত। যখন সন্দেশখালিতে আগুন জ্বলছিল, তখন তিনি ব্যস্ত ছিলেন তাঁর ছবি প্রচার নিয়ে। যা নিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন তৃণমূলের এই তারকা সাংসদ।
পরে অবশ্য লিখিত বিবৃতি জারি করে নুসরত বলেছিলেন, “এই সংকটময় পরিস্থতিতে উস্কানি দেওয়া বা অন্যদের উস্কানি দেওয়া থেকে বিরত রেখে ঐক্যবদ্ধ প্রশাসনকে সহযোগিতা করা উচিত। রাজ্য সরকার অক্লান্ত ভাবে স্থানীয়দের সাহায্য করছে এবং এক জন নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। আমার কাজ আগুন নেভানো, ইন্ধন জোগানো নয়। আসুন সকলে মিলে প্রশাসনকে সহযোগিতা করি এবং দায়িত্ব পালন করতে দিই।”