অস্বস্তি বেড়েছে শাসক দলের। প্রতীকী ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতিতে হুগলির বলাগড়ের দুই যুব নেতা কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। দু’জনকেই বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। এর মধ্যেই আবার দলের বলাগড় ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় শাসক দলের অস্বস্তি বেড়েছে। অস্বস্তি ঝাড়তে অভিযোগকারীকে ডেকে টাকা ফেরতের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
বলাগড়ের রুকেশপুরের বাসিন্দা সুনীল দাসের অভিযোগ, ছেলেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়ে ২০২১ সালে নবীন তাঁর কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নেন। চাকরি না হওয়ায় সুনীল টাকা ফেরত চেয়েও পাননি। সুনীল বিষয়টি বিধায়ক-সহ স্থানীয় নেতৃত্বকে জানান। তাতে নবীন রেগে গেলেও গত জানুয়ারিতে একটি পুজো কমিটির নামে ৪৫ হাজার টাকা করে দু’টি চেক দেন। একটি চেকের তারিখ ছিল গত ২২ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ব্যাঙ্ক জানায়, অ্যাকাউন্টে টাকাই নেই। সুনীল আতান্তরে পড়েন।
সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির এক সদস্য জানান, তাঁকে দু’টি ফাঁকা চেক দিতে বলা হয়েছিল। তিনি দিয়েছেন। কাকে ওই চেক দেওয়া হয়েছে, তাঁর জানা নেই। পরে, ‘স্টপ পেমেন্ট’-এর জন্য তাঁকে ব্যাঙ্কে জানাতে বলা হয়। তিনি তাই করেন।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে শোরগোল পড়ে। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সুনীলকে স্থানীয় একটি পঞ্চায়েতে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে নবীনও ছিলেন। সুনীল বলেন, ‘‘আমাকে অনুরোধ করা হয়, সব মিটিয়ে নেওয়ার জন্য। টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আমি জানিয়ে দিয়েছি, প্রশাসন এবং আইনজীবীর সঙ্গে কথা না বলে সিদ্ধান্ত নেব না।’’
আজ, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন দলীয় বিধায়কদের একাংশ। ডাক পেয়েছেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। মনোরঞ্জন বলেন, ‘‘দিদির বাড়িতে বৈঠকে যাব। সুযোগ পেলে বলাগড়ের পরিস্থিতি সবটাই খোলাখুলি দিদিকে জানাব। দিদির দূত কর্মসূচিতে গ্রামবাসীদের একাংশ আমাদের দিকে আঙুল তুলে বলছেন, চোরের দল এসেছে। কষ্ট হচ্ছে। দলের দুর্নীতিপরায়ণ অংশকে ঠেকাব।’’
নবীন বুধবার জানিয়েছিলেন, ওই দু’টি চেক চুরি হয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘পুজো কমিটির চেক হারিয়ে (মিসিং) গিয়েছে, বলেছিলাম। কেউ চুরি করেছে, বলিনি। যাইহোক, দলের তরফে সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু বলতে নিষেধ করা হয়েছে।’’ রাজ্য তৃণমূলের সহ-সম্পাদক তথা বলাগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক অসীম মাঝি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে তিন মাস আগেই দু’পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। নবীনকে বলি, কোথাও যদি কিছু ভুল হয়ে থাকে মিটিয়ে নিতে। চেক দিয়েও ‘স্টপ পেমেন্ট’-এর বিষয়টি জেনে অস্বস্তি লাগছে। যা বলার দলের জেলা সভাপতিকে জানাব।’’