অভিষেকের কর্মসূচিতে পঞ্চায়েতের রূপরেখা। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আগামিকাল কোচবিহারের দিনহাটা থেকে জনসংযোগ যাত্রা শুরু করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লক্ষ্যে সোমবার কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কর্মসূচি শুরুর ঠিক এক দিন আগে টুইট করে অভিষেককে অভিনন্দন জানিয়ে উৎসাহ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার টুইট করে তিনি লেখেন, ‘‘তৃণমূল নব জোয়ার হল একটি প্রথম অভিনব রাজনৈতিক প্রয়াস। এই প্রয়াসের জন্য আমি অভিষেক এবং দলের কর্মীদের জনসংযোগ যাত্রা শুরু করার জন্য আন্তরিক ভাবে অভিনন্দন জানাতে চাই। এই যাত্রা রাজ্য জুড়ে হবে।’’ মমতা স্বয়ং এই যাত্রায় অংশ না নিলেও, তাঁর সজাগ দৃষ্টি যে ৬০ দিন ব্যাপী এই কর্মসূচিতে থাকবে, তা এই টুইটের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা।
মমতা অভিনন্দন জানানোয় পাল্টা টুইট করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন অভিষেক। টুইটে তিনি লিখেছেন, ধন্যবাদ দিদি! আমরা আমাদের সংকল্পে দৃঢ়, আপনার কল্যাণমূলক উদ্যোগগুলি জাতি, গোষ্ঠী, ধর্ম বা রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে সব পরিবারের কাছে পৌঁছেছে। পশ্চিমবঙ্গ অন্যদের অনুকরণ করার জন্য, আশা এবং অনুপ্রেরণার আলোকবর্তিকা হিসাবে কাজ করে এবং সেই কাজ আগামী দিনেও চালিয়ে যাবে।’’ সোমবার বিকেলে কোচবিহার পৌঁছে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেবেন অভিষেক। পর দিন থেকে শুরু করবেন জনসংযোগ যাত্রা।
এই কর্মসূচিতে আগামী ৬০ দিনের সূচি সাজিয়েছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের দিনহাটা থেকে এই কর্মসূচি শুরু করে ৬০তম দিনে তা সাগরে এসে শেষ হবে। গত বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজের এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন অভিষেক। পঞ্চায়েতে দলের প্রার্থী খুঁজতে ২৫০ টি জনসভা করবেন তিনি, সঙ্গে হবে ৬০টি অধিবেশন। ৩০ লক্ষ মানুষের সঙ্গে সরাসরি জনসংযোগ করার পাশাপাশি, ৩,৫০০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করবেন তিনি। এই কর্মসূচিতে তিনি অস্থায়ী ছাউনিতে রাত্রিযাপন করবেন। এই কর্মসূচি সফল করতে রবিবার রাজ্য এবং জেলাস্তরে নির্বাচনী কমিটি গঠন করল তৃণমূল। রাজ্যস্তরের এবং জেলাস্তরের কমিটির কাজ কী হবে সে বিষয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য কমিটিতে রয়েছেন তৃণমূলের ২২ জন শীর্ষ নেতা। জেলাভিত্তিক ৮টি জ়োন তৈরি করা হয়েছে। প্রত্যেক জ়োনের একটি করে কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেই কমিটিতে রাখা হয়েছে ৬ থেকে ১০ জন তৃণমূল নেতাকে। এই কমিটিগুলির কাজ হবে গোটা প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা। সেই সঙ্গে ভোটার তালিকা তৈরি করা থেকে শুরু করে যাঁরা ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন, তাঁরা যাতে সঠিক ভাবে ভোট দিতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
গ্রামবাংলার মতামত সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের ইনচার্জ এবং কো- ইনচার্জদের বিশেষ ভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। রাজ্যস্তরের যে নির্বাচনী কমিটি তৈরি করা হয়েছে তার চেয়ারম্যান করা হয়েছে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে। কমিটির বাকি সদস্যেরা হলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, মানস ভুইয়াঁ, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস-সহ ২২ জন নেতা। কলকাতা বাদে রাজ্যের ২২টি জেলাকে ৮টি ভাগে ভাগ করে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে।