মুখোমুখি এইচডি দেবগৌড়া এবং ডেরেক ও'ব্রায়েন। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে জোট সঙ্গী খোঁজার কাজ শুরু করে দিলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের এখনও তিন বছর বাকি। তবে এখন থেকেই বিজেপি-বিরোধী জোটের সলতে পাকানো শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল। সেই লক্ষ্যেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অসম ও ত্রিপুরার পাশাপাশি দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে কাজ শুরু করেছে বাংলার শাসক দল। এ ক্ষেত্রে তাদের নজর প্রধানত দক্ষিণের দুটি রাজ্যে। প্রথমটি বামশাসিত রাজ্য কেরল ও দ্বিতীয়টি কর্নাটক। তৃণমূল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দিল্লিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার বাসভবনে যান তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন। সেখানে দীর্ঘ বৈঠক হয় দুই নেতার মধ্যে। বৈঠক থেকেই দেবগৌড়ার সঙ্গে ফোনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা বলিয়ে দেন ডেরেক।
জাতীয় রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর ভিন রাজ্যে সংগঠন প্রসারের কাজে গতি এনেছেন অভিষেক। তাই এ বার দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেও নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী জোটসঙ্গীর খোঁজ শুরু করেছেন তিনি। সেই লক্ষ্যেই তৃণমূলের বার্তাবাহক হিসাবে ডেরেক গিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। অভিষেকের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, সে প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে কিছু না জানালেও, তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে যে তিনি সন্তুষ্ট তা নিজের টুইট মারফত বুঝিয়ে দিয়েছেন এই প্রবীণ জেডি (এস) নেতা। নিজের টুইটে দেবগৌড়া লিখেছেন, ‘আমার বন্ধু তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে আমার সঙ্গে দিল্লির বাসভবনে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন আমার থেকে বয়সে অনেক নবীন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন। আমাদের মধ্যে ইতিবাচক ভাবনার আদান-প্রদান হয়েছে।’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর এমন টুইটের পর জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনা শুরু হয়েছে, দেশের পূর্ব ও উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলির পাশাপাশি মমতার দল এ বার দক্ষিণের দিকে নজর দিয়েছে। সেই লক্ষ্যেই তারা দক্ষিণের প্রবীণ রাজনীতিকের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিতেই এই বৈঠক করেছেন।
অন্যদিকে, কেরলে আগামী এক বছরের মধ্যে প্রতিটি জেলায় জেলা কমিটির সঙ্গে ব্লক কমিটির গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। কেরলের রাজনীতিতে কয়েক দশক ধরে জোট রাজনীতির রমরমা। তাই তৃণমূল নেতৃত্ব কেরলে জোট করেই ভোটে লড়ার পক্ষপাতী। আগামী এক বছরে তারা কেরলের মাটিতে নিজের পায়ে সংগঠনকে দাঁড় করাতে বদ্ধপরিকর। কেরল তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি শামসু পাইলিংগল বলেছেন, ‘‘অবশ্যই আমাদের জোট করে এগোতে হবে। কিন্তু, ২০২৪ সালে দিল্লিতে দিদির নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গেলে আমাদের ভাল এবং জোরালো সংগঠনের প্রয়োজন। তাই এখন আমাদের লক্ষ্য কেরলের প্রতিটি জেলায় শক্তপোক্ত সংগঠন গড়ে তোলা। সংগঠন জোরদার হলেই আমরা জোট শরিক খোঁজার কাজ শুরু করব।’’