Suvendu Adhikari

‘শুভেন্দুকে দেখলেই চু কিত কিত করে ছুঁয়ে দেবেন’! আদিবাসীদের উদ্দেশে বললেন তৃণমূল নেতা

বিধানসভা চত্বরে বি আর অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশ বিজেপি বিধায়কেরা গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে দেওয়ায় তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:২৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

শুভেন্দু অধিকারীকে দেখলেই ‘চু কিত কিত’ করতে করতে ছুঁয়ে দেওয়ার নিদান দিলেন তৃণমূলের এক নেতা। বিধানসভা চত্বরে বি আর অম্বেডকরের মূর্তির পাদদেশ বিজেপি বিধায়কেরা গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে দেওয়ায় তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এর পরেই বিজেপির বিরুদ্ধে আদিবাসীদের ‘অসম্মান’ করার অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে শাসকদল। তার প্রেক্ষিতেই বিরোধী দলনেতাকে ‘চু কিত কিত’ করে ছুঁয়ে দেওয়ার পরামর্শ আদিবাসীদের দিলেন রাজ্য তৃণমূলের তফসিলি উপজাতির চেয়ারম্যান দেবু টুডু। তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজেপিও।

Advertisement

কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের পাওনা আদায়ে বিধানসভায় শাসক তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কেরা তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিলেন। এই কর্মসূচির পাল্টা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেছিল বিজেপিও। তৃণমূলের কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে, বুধবার ধর্নায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কয়েক হাত দূরে ভবনের মূল প্রবেশপথের সামনে বিক্ষোভে বসেছিলেন শুভেন্দু-সহ বিজেপি বিধায়কেরা। তার রেশ ছিল বৃহস্পতিবারও। এর পর শুক্রবার মাথায় করে গঙ্গাজল ভরা কলস এনে বিজেপি বিধায়কেরা তৃণমূলের ধর্নাস্থল ধুইয়ে দিলে শাসক শিবিরে ক্ষোভ চরমে ওঠে। সেখানে শুভেন্দুও ছিলেন। মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, তৃণমলের বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডিরা অভিযোগ করেছেন, ধর্নায় তাঁরাও ছিলেন। সেই স্থল ‘অপবিত্র’ হয়েছে বলে দাবি করে বিজেপি আদিবাসীদের ‘অসম্মান’ করেছে। তারই প্রতিবাদে শনিবার বর্ধমান শহরের কার্জনগেট চত্বরে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে তৃণমূল।

শাসকদলের ওই সভায় ছিলেন দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও বিধায়ক খোকন দাস। সেই সভা থেকে দেবু বলেন, ‘‘আমরা সাঁওতাল বলে, আদিবাসী বলে আমরা অচ্ছুত? কে বলছে? না, শিশিরের ব্যাটা বলছে। ডাকাতের ব্যাটাটা বলছে। আপনারা প্রতিবাদ করবেন না? তাই সারা বাংলায় যেখানেই শুভেন্দুকে দেখবেন, আদিবাসীরা চু কিত কিত করে ছোঁবেন।’’ বিরোধী দলনেতার উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা অচ্ছুত, আমাদের ছোঁয়া পেলে আপনার পবিত্রতা নষ্ট হবে। তাই আমরা ছোঁব।’’ পাল্টা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘পাগল হলে মানুষ এ রকম বলে। তৃণমূল নেতাদের এখন এ রকম অবস্থা। তারা এখন অস্বাভাবিক আচরণ করছেন।’’

Advertisement

বিধানসভায় তৃণমূলের প্রথম দিনের ধর্নায় যখন জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হচ্ছিল, বিজেপি সেই সময়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে তার অবমাননা করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগে ১১ জন বিরোধী বিধায়কের নামে হেয়ার স্ট্রিট থানায় এফআইআর হয়েছিল। দ্বিতীয় দিনের ধর্নাতেও জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা হয়েছে, এই অভিযোগে ৭ জন বিজেপি বিধায়কের নামে আরও একটি এফআইআর হয়েছে। কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখা পাঁচ জন বিজেপি বিধায়ককে সোমবার তলবও করেছে। ঘটনাচক্রে, যাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর, সেই তালিকায় দলবদলু বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের নামও রয়েছে। বিজেপির টিকিটে আলিপুরদুয়ার থেকে নির্বাচিত ওই বিধায়ক বছরখানেক আগে তৃণমূলে যোগ দেন। তা নিয়েও বিতর্ক হয়েছে। এ সবের মধ্যেই আদবাসীদের বিজেপি ‘অসম্মান’ করেছে বলে দাবি করেও সরব হচ্ছে শাসকদল। তা নিয়ে বিরোধী দলের সচেতক মনোজ টিগ্গার পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘অদ্ভূত যুক্তি! আমিও তো আদিবাসী। তা হলে আমার নামে তৃণমূল থানায় এফআইআর করল কেন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement