ট্রান্সফর্মারে তালা ঝোলাচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী কাজল মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
প্রবল বর্ষণের জেরে নিজের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেই ক্ষোভেই গোটা এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে ট্রান্সফর্মারে তালা ঝুলিয়ে দিলেন এক তৃণমূলনেত্রী। উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ জানালেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। যার জেরে দীর্ঘক্ষণ অন্ধকারে ডুবে রইল গোপালনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা। এ নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিজেপি এবং তৃণমূল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মঙ্গলবার গোপালনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা কাজল মণ্ডলের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। সে সময় এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগও ছিন্ন করে দেন কাজল। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ট্রান্সফর্মারে তালা ঝোলানোর সময় কাজল বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। তাই এলাকাতেও বিদ্যুৎ থাকবে না।’’ তৃণমূলনেত্রীর এ হেন আচরণের জেরে মঙ্গলবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অন্ধকারে ডুবে যায় গোপালনগর থানার নতুনগ্রাম সুবাসিনী বিদ্যালয়ের আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা গোপালনগর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। খবর পেয়ে ট্রান্সফর্মারের তালা খুলে বিদ্যুৎ চালু করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। এলাকার অনেকেই ওই তালা খোলার চেষ্টা করেন। তবে মঙ্গলবার রাত ১১টা পর্যন্ত ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়নি। পুলিশের বিরুদ্ধে কাজলের তাঁবেদারি করার অভিযোগও করেছেন স্থানীয়দের একাংশ। রাতেই পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা।
ট্রান্সফর্মারের তালা খোলার চেষ্টা চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
বেআইনি ভাবে এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করার অভিযোগে কাজলের শাস্তির দাবিও করেন এলাকার বহু বাসিন্দা। যদিও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন কাজল। তবে এ ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি-র বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বনস্পতি দেবের দাবি, ‘‘এটা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। পুলিশি মদতে সন্ত্রাস চালাতে এবং লুঠতরাজের উদ্দেশ্যেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করেছিল তৃণমূল। পরিকল্পনা করে দলবদ্ধ ভাবে ওই এলাকায় গিয়েছিল শাসকদলের লোকজন। তা রুখে দিয়েছেন এলাকার মানুষ। তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানাই।’’ তবে বিজেপি-র দাবি উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। বনগাঁ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘বিজেপি-র কথার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’’ সেই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ‘‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যদি কেউ এ কাজ করেন, তবে তা ঠিক হয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল।’’