প্রতীকী ছবি।
সোমবার গৌড়বঙ্গ সফরে মালদহে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তার আগেই তাঁকে চিঠি দিয়ে ক্ষোভ জানাল গৌড় ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাঁদের অভিযোগ, মহদিপুরের বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে যে সব ট্রাক পণ্য রফতানির কাজ করে, তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে নিয়মিত টাকা তোলা হয় এবং এই কাজের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা জড়িত।
চিঠিতে চার জনের নাম করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে প্রসেনজিৎ ঘোষ এবং চন্দন ঘোষ স্থানীয় তৃণমূল নেতা। তাঁরা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ওই চিঠিতে ট্রাকমালিকদের সংগঠনের দাবি— মহদিপুর আন্তর্জাতিক সীমান্ত বাণিজ্য কেন্দ্র দিয়ে রোজ গড়ে তিনশো ট্রাক বাংলাদেশের পণ্য নিয়ে যায়। রফতানির আগে ট্রাকগুলিকে বেসরকারি পার্কিং জ়োনে রাখা হয়। সেখানে প্রতিদিন পার্কিং ফি ১৪০ টাকা। সংগঠনটির দাবি, এই ফি ছাড়াও কুপন ছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের নামে কুপন কেটে টাকা তোলা হয়। তা ছাড়াও বিভিন্ন পুজো, কীর্তনের নামেও টাকা আদায় করা হয়।
ট্রাকমালিকদের সংগঠন হিসেব করে দেখিয়েছে, রোজ ট্রাকপ্রতি বিভিন্ন খাতে আদায় করা চাঁদার পরিমাণ গড়ে ২১০০ টাকার কিছু বেশি। তা হলে ৩০০টি ট্রাক বাবদ দিনে আদায় হয় প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা। মাস গেলে যা দাঁড়ায় প্রায় দু’কোটি টাকায়। ট্রাকমালিকদের দাবি, এই সব কিছুর পিছনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের দু’জন তৃণমূল নেতা। এক জন প্রসেনজিৎ ঘোষ, যাঁর স্ত্রী বর্তমানে ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী ও তিনি নিজে মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক। অন্য জন চন্দন ঘোষ। তাঁর স্ত্রী মহদিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। ট্রাকমালিক সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মালেকের অভিযোগ, এই দু’জনের নেতৃত্বেই জোর করে টাকা আদায় চলছে। এর আগে পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সরাসরি চিঠি লিখে নালিশ জানানো হয়েছে বলে দাবি তাঁর।
প্রসেনজিৎ বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি ভিত্তিহীন। এটা ষড়যন্ত্র। বরং ওরা (ট্রাকমালিকদের সংগঠন) বিভিন্ন ধরনের বেআইনি কাজ করছে। সুস্থানি মোড় এলাকায় ওই সংগঠনের যে সব বেআইনি কাজ কারবার চলছে, তা নিয়ে পাল্টা প্রশাসন এবং মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানানো হবে।’’ একই দাবি জানিয়েছেন চন্দনও। এই অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৌসম নুর বলেন, ‘‘এর আগেও এই ধরনের অভিযোগের কথা শুনেছিলাম। তখনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। আবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।