TMC

শাসকের ফ্লেক্স বাজির পাশেই, নেতা বেপাত্তা

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে ইছাপুর নীলগঞ্জ এলাকায় আজিবরই ছিলেন তৃণমূলের প্রচারের মুখ। তাঁর ঘরে মজুত বাজির পাশ থেকেই মিলেছে সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে এলাকার তৃণমূল প্রার্থীর ফ্লেক্স।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দত্তপুকুর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৪১
Share:

দত্তপুকুরে তৃণমূল নেতা আজিবর রহমানের বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।

বাজি ও তার প্রচুর মোড়ক রাখা ছিল ঘরে। পাশেই গাদা করা তৃণমূলের পতাকা, ফেস্টুন, ফ্লেক্স। দত্তপুকুরের মোচপোল এলাকায় তৃণমূল নেতা আজিবর রহমানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে এই সব। গত রবিবার বিস্ফোরণের পর থেকেই খোঁজ মিলছে না আজিবরের।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে ইছাপুর নীলগঞ্জ এলাকায় আজিবরই ছিলেন তৃণমূলের প্রচারের মুখ। তাঁর ঘরে মজুত বাজির পাশ থেকেই মিলেছে সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে এলাকার তৃণমূল প্রার্থীর ফ্লেক্স। এ সবই বাজি-কারবারে তৃণমূল নেতৃত্বের যোগসূত্রের বড় প্রমাণ বলে মনে করছেন স্থানীয় মানুষ। যদিও বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘‘আজিবর নামে ওখানে তৃণমূলের কেউ নেই। আমি এই নাম প্রথম শুনলাম।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দলের ফ্লেক্স ঘরে রাখলেই সে তৃণমূলের নেতা হতে পারে না। কেউ অন্য কাজে ব্যবহার করতেও ফ্লেক্স খুলে নিজের বাড়িতে এনে রাখতে পারে। তেমনই কেউ ফ্লেক্স খুলে অন্যের বাড়িতেও রেখে দিতে পারে।’’

নেতৃত্ব যা-ই বলুন, গ্রামের অনেকেরই দাবি, ভোটে এলাকায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন আজিবর ও তাঁর দলবল। ইছাপুর মোচপোল এলাকার সংশ্লিষ্ট বুথে এ বার জিতেছে আইএসএফ। দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক কুতুবউদ্দিন ফতেহি বলেন, ‘‘নিজেদের নেতা-কর্মীদের আড়াল করতে তৃণমূল নেতারা আইএসএফের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন। স্থানীয় মানুষ যেটা বলবেন, সেটাই ঠিক।’’ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে— এর বেশি এখনও বিশেষ কিছুই বলছেন না পুলিশ কর্তারা।

Advertisement

একই সঙ্গে জানা যাচ্ছে, মোচপোল পশ্চিমপাড়া, বেরুনানপুকুরিয়া, নারায়ণপুরের মতো এলাকায় তৈরি বাজি নানা রাজ্যে যেত। এর মধ্যে একটা বড় অংশ জঙ্গলে চোরাশিকারিরা ব্যবহার করে বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। মূলত যে বাজি এখানে তৈরি হত, তার স্থানীয় নাম ‘রসুন বোমা’ বা ‘পপ পপ বাজি।’ জানা যাচ্ছে, ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের গ্রামে বাজির ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন বিহারের দুই ব্যবসায়ী। শামসুল, কেরামত, মুহিত, মতিয়ার, আজিবর, জেরাত, পণ্ডিতের মতো যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে— তাঁরা সবাই কারবার দেখভাল করতেন মাত্র।

বারাসত পুলিশ জেলার সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিহারের এক বাসিন্দা বিস্ফোরণে মৃতদের তালিকায় আছেন বলে জানি। এর বাইরে অন্য কোনও তথ্য এখনও পাইনি।’’ তাঁর বক্তব্য, তদন্ত চলছে। রিপোর্ট হাতে পেলে পুরো চক্র সম্পর্কে স্পষ্ট বোঝা যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement