প্রশ্নের মুখে তৃণমূল নেতার ‘দাদাগিরি’। প্রতীকী ছবি।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এসে ঘোষণা করেছিলেন, কাজ বন্ধ করে আন্দোলন নয়। ‘জুলুমবাজি’ বন্ধেও কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। অথচ সেই শিল্পশহর হলদিয়াতেই তৃণমূলের এক ওয়ার্ড সভাপতির বিরুদ্ধে গা-জোয়ারি করে শিল্পসংস্থার কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। আলোচনায় অবশ্য জট কেটেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কাজ শুরুও হয়েছে। তবে প্রশ্নের মুখে তৃণমূল নেতার ‘দাদাগিরি’।
হলদিয়া বন্দর থেকে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস্ পর্যন্ত কয়লা নিয়ে যেতে জমি থেকে উঁচুতে কনভেয়ার বেল্টের লাইন তৈরি হচ্ছে। পেট্রোকেম সূত্রে খবর, বন্দর থেকে পাওয়ার প্লান্টে কয়লা বর্তমানে ট্রাকে করে ঘুরপথে আনতে হয়। প্রায় এক দিন সময় লাগে। কনভেয়ার বেল্ট হলে কয়েক ঘণ্টাতেই কয়লা আনা যাবে। আগামী জুন-জুলাই থেকে বেল্টটি পুরোদমে চালু হওয়ার কথা। সেই কাজেই বাধা দেওয়া হয় বুধবার।
কনভেয়ার বেল্টটি হলদিয়া পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের উপর দিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ, স্থানীয়দের কাজে নেওয়ার দাবিতে ওয়ার্ডবাসীর একাংশ কাজ বন্ধ করে দেন। আর তাতে নেতৃত্ব দেন ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রসাদ দাস। তাঁর দাবি, কমপক্ষে পাঁচ জন শ্রমিককে ওয়ার্ড থেকে নিতেই হবে। বর্তমানে অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগে শ্রম দফতরের পোর্টাল ব্যবহৃত হয়। ফলে, সরাসরি নিয়োগ সম্ভব নয়, জানান পেট্রোকেম কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, এর পরেই ওই তৃণমূল নেতা দলবল নিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বন্ধ থাকে কাজ।
এ দিন বিকেলে জ্যোতিপ্রসাদের সঙ্গে সংস্থার আধিকারিকদের বৈঠকে জট কাটে। পেট্রোকেমের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বৈঠকে বোঝানো হয় পোর্টালের মাধ্যমেই কাজের আবেদন করতে হবে। তার পরে বিকেলে কাজ শুরু হয়েছে।’’ জ্যোতিপ্রসাদ অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি কাজ বন্ধের বিরোধী। ওয়ার্ডের ছেলেরা কাজ বন্ধ করেছিল। জানতে পেরে এ দিন বিকেল থেকেই কাজ শুরু করিয়ে দিয়েছি।’’ এ প্রসঙ্গে গেরুয়া সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য সহ-সভাপতি প্রদীপ কুমার বিজলির কটাক্ষ, ‘‘মঞ্চে হাততালি পেতে তৃণমূল নেতারা অনেক কিছুই বলেন। বাস্তবটা যে আসলে উল্টো, পেট্রোকেমের ঘটনাই তার প্রমাণ।’’