কী রয়েছে সিবিআইয়ের চিঠিতে? — ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছে সিবিআই। হাজিরা দিতে হবে মঙ্গলবার বেলা ১১টায়। কিন্তু কোন তদন্তে? এই খবর নিয়ে নানা জল্পনার মধ্যে নিজেই টুইট করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। টুইট করে সিবিআইয়ের পাঠানো সমনের প্রতিলিপিও প্রকাশ্যে এনেছেন তিনি।
সোমবারই সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ দিয়ে জানিয়েছিল, কুন্তলের চিঠির বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না সিবিআই। মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৪ এপ্রিল। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, অভিষেকের কাছে সিবিআইয়ের সমন পৌঁছেছে। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিকেল ৪টে ৪৩ মিনিটে টুইট করেন অভিষেক। সঙ্গে দেন সমনের প্রতিলিপি।
অভিষেক যে চিঠিটি টুইট করেছেন, সেটিতে তারিখ রয়েছে ১৬ এপ্রিল। তবে সেটি অভিষেকের কাছে হাতে হাতে পাঠানো হয়েছে সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর পৌনে দুটোয়। সেই কথা জানিয়ে অভিষেক দাবি করেছেন, তাঁকে হেনস্থা করতেই এই সমন। এই সমনের মাধ্যমে সিবিআই ও ইডিকে ব্যবহার করতে গিয়ে আদালত অবমাননা করে ফেলেছে বিজেপি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের চিঠি প্রসঙ্গে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর নির্দেশনামায় বলেছিলেন, প্রয়োজনে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থা। বিচারপতির সেই ‘পর্যবেক্ষণ’কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ। সেই মামলায় হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। তার পরেও সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিষেককে চিঠি পাঠানোয় তদন্তকারী সংস্থাটির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
— ফাইল চিত্র।
গত ২৯ মার্চ শহিদ মিনার ময়দানে তৃণমূলের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, সারদা মামলায় হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র এবং কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ঘটনাচক্রে, কুন্তলও তার পরে একই ধরনের অভিযোগ করেন। দাবি করেন, অভিষেকের নাম বলতে তাঁর উপরে চাপ তৈরি করছে সিবিআই। এই প্রসঙ্গেই হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, ওই সভায় অভিষেকের মন্তব্যের সঙ্গে কুন্তলের চিঠির কোথায় সাযুজ্য রয়েছে, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। সেই প্রসঙ্গেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলেন।
শুধু সংবাদমাধ্যমকে বলাই নয়, একই অভিযোগ প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল হেস্টিংস থানায়। যেখানে পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন কুন্তল। নিম্ন আদালতের বিচারককেও চিঠি লিখেছিলেন তিনি। সেই চিঠিতেও হুগলির বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতার অভিযোগ ছিল, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে চাপ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। গত বুধবার কুন্তলের অভিযোগের বিষয়টি কলকাতা হাই কোর্টে তুলেছিল ইডি। সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার অভিষেক সংক্রান্ত এমন পর্যবেক্ষণের কথা জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যার উপরে সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে সোমবার। তার পরেও সিবিআইয়ের ডাক পেলেন অভিষেক। তৃণমূল সূত্রে খবর, আদালত অবমাননার অভিযোগ নিয়ে আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন অভিষেক। ফলে এই তদন্তে আইনি লড়াই আরও দীর্ঘতর হওয়ার পথে।