অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে চিঠি দিল সিবিআই। ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠাল সিবিআই। কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত বিষয়ে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস পাঠানো হয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, দুপুর দেড়টা নাগাদ ইমেল মারফত নোটিস পৌঁছয় অভিষেকের কাছে। ওই সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবারই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
সোমবারই সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ দিয়ে জানিয়েছিল, কুন্তলের চিঠির বিষয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখনই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে না সিবিআই। মামলাটির পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৪ এপ্রিল।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কুন্তল ঘোষের চিঠি প্রসঙ্গে নির্দেশনামায় বলেছিলেন, প্রয়োজনে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ। সেই মামলায় হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। তারপরেও সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিষেককে চিঠি পাঠানোয় তদন্তকারী সংস্থাটির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষ দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ করছেন যে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তাঁকে অভিষেকের নাম বলার জন্য চাপ দিচ্ছেন। জেল থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে সে প্রসঙ্গে নিম্ন আদালতের বিচারককে চিঠিও লিখেছিলেন কুন্তল। সেই চিঠিতেও হুগলির বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতার অভিযোগ ছিল, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে চাপ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। একই অভিযোগ প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল হেস্টিংস থানায়। যেখানে পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন কুন্তল। গত বুধবার কুন্তলের অভিযোগের বিষয়টি কলকাতা হাই কোর্টে তুলেছিল ইডি। সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার অভিষেক সংক্রান্ত এমন পর্যবেক্ষণের কথা জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
গত ২৯ মার্চ শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, সারদা মামলায় হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র এবং কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ঘটনাচক্রে, কুন্তলও তার পরে একই অভিযোগ করেন। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ওই সভায় অভিষেকের মন্তব্যের সঙ্গে কুন্তলের চিঠির কোথায় সাযুজ্য রয়েছে, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। সেই প্রসঙ্গেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলেন। সিবিআই নোটিস পাঠানোর কিছু পরেই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তোপ দেগে জানান, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজের ‘ইচ্ছা’ অনুসারে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেছিলেন। তার প্রেক্ষিতেই নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট আগেই হাই কোর্টের এই নির্দেশনামায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তাই এই নোটিসের কোনও গুরুত্ব নেই। অভিযেক নিজে একটি টুইটে ওই নোটিসটি তুলে ধরে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তাঁকে ‘হেনস্থা’ করার অভিযোগ তোলেন।