শুভেন্দু অধিকারীর জেলাতেই তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রায় বদল আনতে পারেন অভিষেক। ছবি: সংগৃহীত।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রা কৌশল বদল হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। রাজনৈতিক দিক থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই জেলার ভূমিপুত্র হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের অন্যতম মুখ তিনিই। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে শুভেন্দুর প্রতি তাঁর ‘বিশেষ আস্থা’র কথা জানিয়ে গিয়েছেন। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এমন ‘আস্থাভাজন’ নেতাকেই তাঁর দুর্গে ধরাশায়ী করতে চায় তৃণমূল। তাই তাঁর জেলাতেই তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রা তথা নবজোয়ার কর্মসূচির কৌশলে খানিক বদল আনতে পারেন অভিষেক। এখনও পর্যন্ত স্থির রয়েছে, জনসংযোগ যাত্রা ৩৭, ৩৮, ৩৯ ও ৪০তম দিনটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় থাকবেন তিনি। অর্থাৎ, জনসংযোগ যাত্রায় চার দিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জন্য বরাদ্দ করেছেন তিনি। আপাতত স্থির হওয়া কর্মসূচিতে পাঁশকুড়া পূর্ব, পটাশপুর, রামনগর ও নন্দকুমারে কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছে। যে হেতু পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিশেষ করে নজর রয়েছে অভিষেকের, তাই শেষ মুহূর্তে নতুন স্থানেও বিশেষ কর্মসূচি হতে পারে বলেই মত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের।
সূত্রের খবর, এই জেলায় জনসভা অধিবেশন এবং জনসংযোগের পাশাপাশি মিছিলে হাঁটতে পারেন অভিষেক। এখনও পর্যন্ত জনসংযোগ যাত্রার কর্মসূচিতে মিছিলকে রাখা হয়নি। কিন্তু মনে করা হচ্ছে, অভিষেকের এই জনসংযোগ যাত্রায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সীমান্তে প্রবেশ করলেই নতুন কর্মসূচির সংযোজন ঘটতে পারে। যেখানে তিনি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করতে পারেন। তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক থেকে শুরু করে নন্দকুমার, নন্দীগ্রাম, কাঁথি, দিঘা-সহ বেশ কিছু এলাকায় পদযাত্রা করতে পারেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবে তাঁর পূর্ণাঙ্গ সফরসূচি জানানো হবে একেবারে শেষ মুহূর্তে। অভিষেকের লক্ষ্য আগামী পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নিজেদের শক্তি ধরে রাখা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ তো বটেই, তমলুক এবং কাঁথি লোকসভা আসনে তৃণমূলের পক্ষে ধরে রাখায় বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূল নেতৃত্বের কাছেও। তাই জনসংযোগ যাত্রায় এই জেলার জন্য চার দিন বরাদ্দ করেছেন অভিষেক। সঙ্গে অতিরিক্ত কর্মসূচি করারও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি।
তৃণমূল নেতৃত্বের লক্ষ্য, যে ভাবে কাঁথি পুরসভা ‘অধিকারীদের গড়’ হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূল জিতে নিয়েছে, সে ভাবেই তাঁরা পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটে জয় পাবেন। সেই জয়ের পথ মসৃণ করতে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যদি বিশেষ কোনও পদক্ষেপ নেন, তা হলে তা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে হবে বাড়তি পাওনা। তাই অভিষেকের আগমনের দু’সপ্তাহের বেশি বাকি থাকলেও এখন থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব তাঁর জনসংযোগ যাত্রার কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন বলেই সূত্রের খবর।