আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আগেই আক্রমণে নেমেছিলেন শাসকদল তৃণমূলের নেতা-বিধায়কেরা। এ বার তিন বছর পুরনো অভিযোগ তুলে এনে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আন্দোলনকারী ইন্টার্ন শাহবাজ শেখের বিরুদ্ধে সরব হল তৃণমূল। যদিও শাহবাজের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুরনো অভিযোগ সামনে আনা হচ্ছে।
তৃণমূল নেতা তথা কলকাতা পুরসভার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রধান অরূপ চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার রাতে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে ২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে মধুমিতা ঘোষ (২০) নামে এক প্রথম বর্ষের ডাক্তারির ছাত্রীর ঝুলন্ত উদ্ধারে প্রসঙ্গ তোলেন। অরূপের দাবি, মেয়েটির বাবা ওই ঘটনায় শাহবাজের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছিলেন। অরূপের কটাক্ষ, ‘‘অনিকেত মাহাতোদের দেওয়া নটোরিয়াস ক্রিমিনালের(!) লিস্টে কিন্তু এর নাম থাকে না, কারণ উনি অনিকেতদের লবির।’’ পরে কুণাল ঘোষও সমাজমাধ্যমে একই অভিযোগ করেন।
২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি দুপুরে চকমণ্ডলা হস্টেলের চার তলার একটি ঘরে মধুমিতার দেহ মেলে। শাহবাজ-সহ চার জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মধুমিতার বাবা ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ। অভিযোগ ছিল, এই চার জন মধুমিতাকে মাঝেমধ্যে উত্ত্যক্ত করতেন। এর ভিত্তিতে পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু করে। কলেজের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজিতকুমার দে ছ’জনের তদন্ত কমিটিও গঠন করেছিলেন।
কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ করবী বড়াল বলেন, ‘‘আমার দায়িত্ব নেওয়ার অনেক আগের ঘটনা। কমিটির রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছিল কি না, খোঁজ নিয়ে বলতে পারব।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ঘটনার সাত মাসের মধ্যে রামপুরহাট আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। সেখানে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার কথা পুলিশ উল্লেখ করেছে। এখনও চার্জ গঠন হয়নি। মামলাটি বিচারাধীন।
হুমকি প্রথা চালানোর অভিযোগে সম্প্রতি কলেজের তিন জন পড়ুয়াকে হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁদের এক জন ময়ূখ সাহা বলেন, ‘‘মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বার শাহবাজদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’ শাহবাজ বলেন, ‘‘ঘটনার পরে পুলিশ আমাদের ডেকেছিল। আমরা যা জানানোর, জানিয়েছিলাম। তিন বছর পরে তৃণমূল নেতারা এখন আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।’’