Nirmal Maji

TMC: ফোনে অধরা নির্মল, তবে পাশে নেই দল, কুণাল বললেন, এটা অপ্রয়োজনীয় কুৎসিত চাটুকারিতা

নির্মল মাজির মুখে মা সারদা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে আলোচনা চলছিলই। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বিবৃতিতে তা আরও বাড়ল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২২ ১৫:৪৬
Share:

বিতর্কে জড়িয়ে চাপে নির্মল মাজি। ফাইল চিত্র

মা সারদা এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তুলনা করায় তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজির দাবি খণ্ডন করেছে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন। আর তার পরেই দলের তরফে নির্মলের নিন্দা করা হল। দলের মুখপাত্র তথা রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ নির্মলের বক্তব্যকে ‘কুৎসিত চাটুকারিতা’ বলে সরাসরি অভিহিত করলেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কুণাল বলেন, ‘‘মা সারদা সকলের প্রণম্য। তাঁর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুলনার তো কোনও দরকারই ছিল না। এটা অপ্রয়োজনীয় কুৎসিত চাটুকারিতা। আমরা যাঁরা দিদিকে ভালবাসি, তারা জানি তাঁর লড়াইয়ের কথা। বিরোধী নেত্রী হিসাবে সাধারণ মানুষের জন্য তাঁর লড়াই কিংবা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে বাংলার উন্নয়নের জন্য লড়াই গোটা দেশ জানে। তিনি নিজের আলোতেই আলোকিত।’’ ওই ‘অবাঞ্ছিত’ মন্তব্য করে নির্মল দলের পাশাপাশি মমতাকেও ‘বিড়ম্বনায়’ ফেলেছেন বলে অভিমত কুণালের।

এর পরে আনন্দবাজার অনলাইনের পক্ষ থেকে একাধিক বার নির্মলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তবে দল যে ‘অস্বস্তিতে’ সেটা বুঝিয়ে দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যিনি ওই মন্তব্য করেছেন, তাঁর সঙ্গে এখনও আমার কথা হয়নি। তবে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে তাঁরা মর্মাহত। আমরা বিষয়টার উপরে শ্রদ্ধাশীল।’’ আবার এরই পাশাপাশি তৃণমূলের অপর নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার মন্তব্য করেছেন, নির্মল ‘আবেগ’ থেকে ওই কথা বলে থাকতে পারেন।

Advertisement

সম্প্রতি একটি ভিডিয়োয় দেখা যায় (যদিও আনন্দবাজার অনলাইন সেটির সত্যতা যাচাই করেনি) নির্মল বলেন, মা সারদাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিসেবে পুনর্জন্ম নিয়েছেন। এর পর থেকেই বিরোধী দলের নেতারা নির্মলের মন্তব্য ‘অবাঞ্ছিত’ বলে দাবি করেন। ওই বিষয়ে তৃণমূলের ‘নীরবতা’ নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।

ভিডিয়োটিতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বর্তমানে তৃণমূলের বিধায়ক নির্মলকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘মা সারদা মৃত্যুর কিছু দিন আগে স্বামী বিবেকানন্দের সতীর্থ সন্ন্যাসীদের বলেছিলেন, আমি কালীঘাট মন্দিরে যাই। হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে দিদি যেখানে থাকেন, সেই রাস্তা দিয়ে তিনি যেতেন। মা সারদা বলেছিলেন, মৃত্যুর এত দিন পরে কালীঘাটের কালীক্ষেত্রে মানুষ রূপে জন্ম নেব। ত্যাগ, তিতিক্ষা, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যাব। সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবে মা সারদার মৃত্যুর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মের সময়টা সেই অঙ্ক মিলিয়ে দিচ্ছে।’’

নির্মল আরও বলেছেন, ‘‘তিনিই মা সারদা, তিনিই ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল, সিস্টার নিবেদিতা, খড়ের দুর্গা। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে তাঁর জন্ম, তাই মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু সবেতেই তিনি পাশে রয়েছেন।’’

বৃহস্পতিবার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের পক্ষে বিবৃতি জারি করে বলা হয়, ওই মন্তব্যে সারদাদেবীর মর্যাদাহানি হয়েছে। মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ একটি ভিডিয়ো বার্তার মাধ্যমে জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পুনর্জন্মে মা সারদা বলে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন এবং এর ফলে অগনিত মানুষের আবেগে আঘাত লেগেছে।

নির্মলের নাম না-করলেও তাঁর ওই বক্তব্যের উল্লেখ করে স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, ‘‘আমরা যথেষ্ট উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সম্প্রতি কোনও এক রাজনৈতিক নেতা প্রকাশ্য বক্তৃতায় বলেছেন যে, শ্রীশ্রী দেবী সারদা মা না কি দেহত্যাগের আগে রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজদের বলে গিয়েছেন, তিনি এর পরে মানবীরূপে দক্ষিণ কলকাতায় আবির্ভূত হবেন এবং তখন তিনি ত্যাগ, তিতিক্ষা, সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাবেন। শ্রীশ্রী মা সারদাদেবী সম্পর্কে রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশন এবং অন্যান্য প্রকাশন সংস্থা থেকে যে কয়েকটি প্রামানিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার কোনওটিতেই এই তথ্য নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement