Jyotipriyo Mullick

জ্যোতি-হীন উত্তর ২৪ পরগনা চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের কাছে, মতুয়াদের বনগাঁ পুনরুদ্ধারে মরিয়া তৃণমূল

একসময় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সংগঠন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখতেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চোখ দিয়েই। ২০০৯ সালে মতুয়াদের ভোট বামফ্রন্টের থেকে সরিয়ে আনতেও বড় ভূমিকা ছিল তাঁর।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৫৩
Share:

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

মতুয়া ভোট তৃণমূলের অনুকূলে আনতে অনেক পরিশ্রম করেছিলেন তিনি। কিন্তু এখন তিনি কেবল রাজ্য রাজনীতিরই বাইরের নন, জেল হেফাজতে। তিনি রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর অনুপস্থিতিতে কোর কমিটি গড়ে দলের নেতাদের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কোর কমিটিই বৃহস্পতিবার বিকেলে বারাসতের তিতুমীর হলে জেলার বিধায়কদের নিয়ে বসেছিল। বৈঠকে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়ে বনগাঁ লোকসভা আসন জয়ের কথা বলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পাঁচটি লোকসভা আসনের মধ্যে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বারাসত, বসিরহাট ও দমদম আসনগুলি জিতেছিল তৃণমূল। আবার ব্যারাকপুর ও বনগাঁ আসন জিতেছিল বিজেপি। যদিও, ২০২২ সালের মে মাসে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন সাংসদ অর্জুন সিংহ। স্বাভাবিক ভাবেই আগামী লোকসভা ভোটে বনগাঁ আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চাইছে বাংলার শাসকদল। তাই সেই আসনটি জয়ের জন্য জোর দেওয়া হয়েছে সংগঠনের ওপর। কারণ গত বিধানসভা ভোটে রাজ্য জুড়ে বিজেপির বিপর্যয় হলেও, বনগাঁ লোকসভার অধীন ছয়টি আসনেই জয় পেয়েছিল বিজেপি। পরে বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূলে যোগদান করায় তাঁকেই বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করা হয়েছে। এ বার সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে বনগাঁ লোকসভা উদ্ধারই যে কোর কমিটির অন্যতম লক্ষ্য, বৈঠকে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন তাপস রায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, পার্থ ভৌমিক, নির্মল ঘোষের মতো নেতারা। সিএএ নিয়ে মতুয়াদের মধ্যে বিজেপি প্রচার চালিয়েছে আসছে, সেই প্রচার যে ‘রাজনৈতিক ভাঁওতা’ তাও সাংগঠনিক কায়দায় তুলে ধরতে বলা হয়েছে।

বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার যে সব জায়গায় ক্রুটিবিচ্যুতি রয়েছে, সেগুলি দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে হবে। এ ক্ষেত্রে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও চেয়ারম্যানকে। বনগাঁ ছাড়াও তৃণমূলের আরও তিন সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। সব জেলার বিধায়কদের পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে কথা বলে কোথাও কোনও সাংগঠনিক গলদ রয়েছে কি না, তা লিখিত ভাবে জানাতে হবে জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানকে। সেই লিখিত রিপোর্টের ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

একসময় তৃণমূলনেত্রী মমতা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সংগঠন দেখতেন জ্যোতিপ্রিয়র চোখ দিয়েই। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে মতুয়াদের ভোট বামফ্রন্টের থেকে সরিয়ে আনতেও বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। কারণ ২০০১-০৬ পর্যন্ত জ্যোতিপ্রিয় ছিলেন গাইঘাটার বিধায়ক। পরে আসন পুনর্বিন্যাসের কারণে গাইঘাটার বদলে হাবড়া থেকে বিধায়ক হলেও, বনগাঁর সঙ্গে যোগ ছিন্ন হয়নি তাঁর। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর উত্তর ২৪ পরগনার সংগঠনে বনমন্ত্রীর ক্ষমতা অনেকটাই খর্ব হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটে আবারও তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাইছিলেন তৃণমূলনেত্রী। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে যাওয়ায় কোর কমিটি গড়ে বিকল্প সাংগঠনিক ব্যবস্থা করেছেন মমতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement