রাজ্যোর প্রাক্তম মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব-সহ দলের সমস্ত সাংগঠনিক পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের দেখভালের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধেই। দল ও সরকারের সব দায়িত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হলেও, ফেডারেশন থেকে তাঁর অপসারণ ঘোষণা করেননি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সেই অপসারণের ঘোষণাকেই নিজেদের সংগঠনের ক্ষেত্রে কার্যকর বলে মনে করছে তাঁরা। কারণ, এত দিন যে নেতাকে ফেডারেশনের দায়িত্ব দেওয়া হত, তা হত তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন ক্রমেই। তাই এ বার তাঁরা চান দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক দল। নতুন কোনও নেতাকে তাঁদের দায়িত্ব নিয়ে আসুক শীর্ষ নেতৃত্ব।
নতুন কাউকে দ্রুত দায়িত্বে আনার দাবির পিছনে ফেডারেশনের সাংগঠনিক ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কারণ, ডিএ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধী সংগঠনগুলির দাবির কাছে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ফেডারেশন। সঙ্গে ডিএ আদায়ের দাবিতে অন্য বিরোধী সংগঠনগুলি আদালতে মামলা করলেও ফেডারেশন তেমনটা করেনি। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের ৩১ শতাংশ ডিএ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। এই কাজের জন্য রাজ্য সরকারকে তিন মাস সময় দিয়েছে হাই কোর্ট। সেই তিন মাসের মধ্যে দেড় মাস অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। আর দেড় মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে নবান্নকে। তাই সংগঠনের অবস্থান ঠিক করতে শীর্ষ নেতৃত্বের অভাব অনুভব করছেন ফেডারেশন নেতারা।
এক সময় সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের দায়িত্বে ছিলেন পার্থ। পরে সেই দায়িত্ব চলে যায় শুভেন্দু অধিকারীর হাতে। কিন্তু ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলে আবারও দায়িত্ব ফিরে আসে পার্থের হাতে। সেই থেকেই দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কিন্তু ফেডারেশনের একাংশের দাবি, পার্থকে তাদের দাবি দেওয়া ও অভিযোগ প্রসঙ্গে জানানো হলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সুরাহা করেননি তিনি। যে হেতু দল তাঁকে ফেডারেশনের দায়িত্ব দিয়েছিল সে ক্ষেত্রে তাই তাঁর বিরোধিতা করেননি তাঁরা। এখনও তৃণমূল থেকে পার্থর অপসারণ হয়ে যাওয়ায় নতুন কাউকে এই দায়িত্বে চাইছেন ফেডারেশনের নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে ফেডারেশনের অন্যতম নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল ও মন্ত্রিসভা থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণের পর আমরা ধরেই নিয়েছি আমাদের সংগঠনের দায়িত্ব আর উনি নেই। তবুও আমরা আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর অপসারণের ঘোষণা চাইছি। সঙ্গে আমাদের সংগঠনের নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও আমাদের কাজের সুবিধা হবে।’’