Mamata Banerjee

TMC: শুক্রবার দুপুর পৌনে ২টো, বিধানসভায় দলের ২১০ বিধায়ককে হাজির হতে হুইপ তৃণমূলের

বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বড় জয়ের পরে শুক্রবার শুরু হচ্ছে প্রথম অধিবেশন। আর তারই প্রথম বাজেট অধিবেশনে ভাষণ দেবেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২১ ১৯:২২
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

রাজভবন এবং নবান্নের ধারাবাহিক দ্বন্দ্বের মধ্যেই শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে ভাষণ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। আর সেই ভাষণের সময় দলের সব বিধায়ককে অধিবেশন কক্ষে হাজির থাকার নির্দেশ দিল তৃণমূল পরিষদয়ী দল। বৃহস্পতিবার দলের পক্ষে এই হুইপ দিলেন তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা আমাদের সব বিধায়কদের দুপুর পৌনে ২টোর মধ্যে অধিবেশন কক্ষে হাজির থাকতে নির্দেশ দিয়েছি।’’

Advertisement

বিধানসভা নির্বাচনের পরে প্রথম অধিবেশনের আগে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সঙ্ঘাত নতুন মাত্রা নিয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে হাওয়ালা দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলেছেন। বৃহস্পতিবার তৃণমূল আবারভ্যাকসিন-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের দেহরক্ষী অরবিন্দ বৈদ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলেছে।ধনখড়ের সঙ্গে সঙ্ঘাত চলছে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। সেই উত্তপ্ত আবহেই বাজেট অধিবেশনের শুরুতে ভাষণ দেবেন রাজ্যপাল।

রাজভবন সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিট নাগাদ বিধানসভায় পৌঁছবেন ধনখড়। বিধানসভার ৩ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকবে তাঁর কনভয়। রেওয়াজ মতো বিধানসভার গাড়ি বারান্দা থেকে স্পিকার অধিবেশন কক্ষে নিয়ে যাবেন রাজ্যপালকে। এর পরে ভাষণ দেবেন তিনি। সরকার পক্ষ যা লিখে দিয়েছে সেটাই ভাষণে পড়ার রেওয়াজ রাজ্যপালের। কিন্তু ধনখড় তা নিয়ে আপত্তি তোলেন। এ নিয়ে অনেক বিতর্কও হয়েছে। শাসকদলের আশঙ্কা, ভাষণেকোনও বদল করতে পারেন রাজ্যপাল। তাঁর অপছন্দের অংশ বাদ দিতে পারেন। আবার কিছু যুক্ত করতেও পারেন। তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে, অধিবেশন কক্ষেই যাতে বিধায়করা নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই সবাইকে হাজির থাকতে বলা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। একই সঙ্গে ভোটে বিপুল জয়ের পর বিধানসভা অধিবেশনের প্রথম দিন দলের শক্তি প্রদর্শনও তৃণমূলের লক্ষ্য বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

দলের ২০৯ জন বিধায়ককেই অধিবেশনের হাজির থাকতে বলা হয়েছে। খড়দহের বিধায়ক কাজল সিংহ ও গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর প্রয়াত হয়েছে। এছাড়াও ভবানীপুর বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আর স্পিকার সর্বদাই দলীয় হুইপের বাইরে থাকেন। তাই এক্ষেত্রে যতজন বিধায়ক রয়েছেন, তাঁদেরই হাজির থাকার হুইপ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবারই সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় একটি ছবি প্রকাশ করে বলেন, ‘‘ভুয়ো টিকা-কাণ্ডের প্রতারক দেবাঞ্জনের ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে তার নিরাপত্তা রক্ষী। তাঁর নাম অরবিন্দ বৈদ্য। সে-ও ভুয়ো কিনা বলতে পারব না।এটা চিনতে পারেন কিনা দেখুন তো! ওই নিরাপত্তারক্ষী কাদের পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন? মাননীয় রাজ্যপাল ও তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন দেবাঞ্জনের নিরাপত্তা রক্ষী।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শোনা যাচ্ছে এই নিরাপত্তারক্ষীর মাধ্যমে কোনও বিশেষ ব্যক্তির কাছে মাঝে মধ্যে খাম ও উপহার পাঠাত দেবাঞ্জন। আমরা দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্তকারীদের গোচরে আনব। চাইব সমস্ত তথ্য প্রকাশ করা হোক। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন টিকা-কাণ্ডে মানুষকে যাঁরা অসুবিধায় ফেলেছেন তাঁদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। যদি দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের সঙ্গে প্রতারকের কোনও যোগ রয়েছে বা ছবিটি সত্য তাহলে দেশের পক্ষে তা ভয়ঙ্কর।’’ এরপর রাজ্যপাল এখনও পর্যন্তকোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তৃণমূল পরিষদীয় দল মনে করছে, বিধানসভায় আসা-যাওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমের সামনেও তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement