(বাঁ দিকে) শুভেন্দু অধিকারী, ছন্দা সরকার। —ফাইল ছবি।
শারদোৎসব কাটলেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করবেন কলকাতা পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর ছন্দা সরকার। এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে কলকাতা পুরসভার ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এখন আমি পুজো নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। পুজো কেটে গেলেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ করব। এবং আমার যা যা বক্তব্য, সে বিষয়েও বিস্তারিত জানাব।’’ গত ২৭ সেপ্টেম্বর শুভেন্দু নিজের এক্স হ্যান্ডলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। ভিডিয়োতে দেখা যায় ছন্দা কোনও এক প্রোমোটারের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত আলোচনা করছেন (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সেখানে ছন্দাকে কারও (দাবি প্রোমোটারের) কাছে টাকা চাইতে শোনা যায়। ভিডিয়োতে ছন্দাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ঘনশ্রী (১২৫ নম্বর ওয়ার্ডের আগের কাউন্সিলর) কত করে নিতেন?’’ তাঁর উত্তরে কেউ এক জন জানান, ‘‘স্কোয়্যার ফুট হিসাবে ১৫০ টাকা!’’ ছন্দাকে সেই টাকা কমিয়ে দিতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে ৮০ টাকা করে দিলেই হবে। তোমরা কাজ করো।’’ শেষ পর্যন্ত দু’পক্ষের মধ্যে এক লাখ টাকার ‘চুক্তি’ হয়। ভিডিয়োতে দেখা যায় ছন্দা দাবি করছেন, ‘‘এক লাখ দিয়ে কাজ শুরু করুক। আমার কোনও আপত্তি নেই।’’
যদিও শুভেন্দুর ভিডিয়ো প্রকাশের পর তোলা চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর ছন্দা। পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী জানান তিনি কোথা থেকে এই ভিডিয়ো পেয়েছেন। আমি তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।’’ দলের সঙ্গে আলোচনা করেই ওই ভিডিয়ো নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন বলেও জানিয়েছেন ছন্দা। শুভেন্দুর উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি সৎসাহস থাকে তো যিনি ভিডিয়ো করেছেন, তাঁর নাম প্রকাশ্যে আনুন।’’ পরে শুভেন্দু সংবাদমাধ্যমের সামনে আবার সেই ভিডিয়ো দেখিয়ে দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল মানেই চোর। কোনও পরিবর্তন হয়নি।’’
কাউন্সিলর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশের যে কেউ যে কারও বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করতে পারেন। তাই ওই তৃণমূল কাউন্সিলরও আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। আমিও আদালতে নিজের জবাব দেব।’’ শুভেন্দুর দাবি, ওই ভিডিয়োটিতে কোনও ভুল নেই। কেন্দ্রীয় স্তরের কোনও সংস্থাকে দিয়ে ওই ভিডিয়োটির ভয়েস স্যাম্পল টেস্ট করালেই প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন হয়ে যাবে। আপাতত, পুজো মিটে যাওয়ার পর এই আইনি লড়াই শুরু হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।