Maniktala By-Poll Election

বুথ খুঁজে না পেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণের মা, এগিয়ে গেলেন তৃণমূল কাউন্সিলর

বুধবার সকাল থেকে মানিকতলা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। তবে বুধবার এই বিধানসভা কেন্দ্রেই দেখা গেল ‘অন্য ছবি’।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ১৫:০১
Share:

(বাঁ দিক থেকে) বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবের মা এবং তৃণমূল কাউন্সিলর অনিন্দ্যকিশোর রাউত। — নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এবং মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবের মধ্যে ‘কথার লড়াই’কে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ভোটের উত্তাপকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে দুই নেতার ‘বাগ্‌যুদ্ধ’। সেই আবহেই বুধবার সকাল থেকে মানিকতলা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। তবে বুধবার এই বিধানসভা কেন্দ্রেই দেখা গেল ‘অন্য ছবি’। বিজেপি প্রার্থীর মাকে ভোট দেওয়াতে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর।

Advertisement

বুধবার বেলার দিকে মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট দিতে এসেছিলেন কল্যাণের মা সন্ধ্যা চৌবে। সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা ভোট দিতে এলেও সঙ্গে ‘ভোটার স্লিপ’ ছিল না। তাঁর দাবি, তিনি সেটা আনতে ভুলে গিয়েছেন। ফলে কোন বুথের কোন পার্টে ভোট দিতে যাবেন তিনি তা নিয়ে ধন্দে পড়েন। বিষয়টি নজরে আসতেই এগিয়ে আসেন মানিকতলার তৃণমূলের মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট তথা ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্যকিশোর রাউত।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, অনিন্দ্য এসে কথা বলেন কল্যাণের মায়ের সঙ্গে। তাঁর সমস্যার কথা মন দিয়ে শোনেন, তার পর নিজেই ভোট দেওয়ানোর ব্যবস্থা করিয়ে দেন অনিন্দ্য। ভোটার তালিকা ঘেঁটে সন্ধ্যা চৌবের নাম খুঁজে বার করে কোন বুথের কোন পার্টে ভোট দেবেন তা-ও বলে দেন। তার পর ভোট দেন সন্ধ্যা। অনিন্দ্যের এই সাহায্যে খুশি তিনি। সন্ধ্যার কথায়, ‘‘ও আমার ছেলের মতো। আমি কিছুতেই বুথ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। অনিন্দ্য এগিয়ে এসে আমায় সাহায্য করেছে। এই সাহায্য পেয়ে আমি খুব খুশি।’’

Advertisement

এ প্রসঙ্গে অনিন্দ্য বলেন, ‘‘ভোটারেরা ভোট দিতে এলে আমাদের সাহায্য করতেই হবে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই আমি এগিয়ে গিয়েছিলাম।’’ এক দিকে যখন এই ছবি দেখা গেল ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে, তখন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে কল্যাণকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সমর্থকেরা। এমনকি, তাঁকে দেখে ‘চোর চোর’ স্লোগানও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মানিকতলা থেকে জয় পান তৃণমূলের সাধন পাণ্ডে। রাজ্যের মন্ত্রীও হন তিনি। ২০২২ সালে সাধন প্রয়াত হন। তার পর থেকে ওই কেন্দ্র বিধায়কহীন। আইনি জটে ঝুলে ছিল মানিকতলার উপনির্বাচন। পরে হাই কোর্টের নির্দেশের পরই জট কাটে। তার পরই বুধবার এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে।

মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল এ বার প্রয়াত বিধায়ক সাধনের স্ত্রী সুপ্তি পাণ্ডেকে প্রার্থী করেছে। বিজেপির টিকিটে লড়ছেন কল্যাণ। ২০২১ সালেও তাঁকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। সে বার সাধনের কাছে হেরে যান কল্যাণ। এই কল্যাণকে নিয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে ‘বোমা’ ফাটান কুণাল। তিনি জানান, ভোটে সাহায্য চেয়ে স্বয়ং বিজেপি প্রার্থী ‘ঘুষের বিনিময়ে অন্তর্ঘাতের প্রস্তাব’ দিয়েছেন তাঁকে। ভোটের ঠিক তিন দিন আগে তাঁর কাছে ওই প্রস্তাব এসেছিল বলে জানান কুণাল।এমনকি, একটি কল রেকর্ডিংও (ওই অডিয়ো রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) শোনান তিনি। কুণালের আনা এই অভিযোগ যদিও সরাসরি অস্বীকার করেছেন কল্যাণ। তবে একই সঙ্গে তিনি মেনেও নিয়েছেন যে, কুণালের প্রকাশ করা অডিয়ো রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠস্বর তাঁরই। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপি সংঘাত চরমে ওঠে। তার মধ্যেই বুধবার ভোট চলছে মানিকতলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement