নির্দিষ্ট ফর্মে প্রত্যেক সদস্যের এলাকায় খতিয়ান চাওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। ফাইল চিত্র।
কাজ না করে পদে থাকা যাবে না— পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের নিচুতলাকে বার্তা দিচ্ছেন রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। কাজ না করার অভিযোগে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রবিবারই পদত্যাগ করতে হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানকে।
এখানেই শেষ নয়, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে কোন সদস্য কেমন কাজ করেছেন, সব জেলা থেকেই রিপোর্ট নিতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
নির্দিষ্ট ফর্মে প্রত্যেক সদস্যের এলাকায় খতিয়ান চাওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। তাতে মতামত দিতে হবে দলের অঞ্চল ও ব্লক সভাপতিদেরও। এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই কি তা হলে পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট দেওয়ার প্রক্রিয়া হবে, প্রশ্ন তৈরি হয়েছে দলের অন্দরে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট এবং ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের বুথভিত্তিক ফল ধরে বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। সেই রিপোর্টে বুথের ভৌগোলিক গঠন, সেখানে মোট কত জন থাকেন, কোন জাতি ও কোন ধর্মের কত জন বাস করেন— তা জানাতে হবে। সংশ্লিষ্ট বুথ সংরক্ষিত না সাধারণ, বর্তমান সদস্যের নাম কী, কোন পদে রয়েছেন এবং কোন দল থেকে জিতেছেন— সেই সব তথ্য দিতে হবে।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ওই রিপোর্টে সংশ্লিষ্ট সদস্যের মূল্যায়ন করতে হবে অঞ্চল সভাপতি ও ব্লক সভাপতিদের। তবে তৃণমূল ছাড়া অন্য দলের সদস্যের মূল্যায়ন দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে জানানো হয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত কেন?
তৃণমূল সূত্রের দাবি, পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির স্তরে কর্মকর্তাদের সাধারণত দলের জেলা নেতারা বাছাই করেন। অনেক সময়ে অভিযোগ ওঠে, উপযুক্ত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কোনও নেতার ‘কাছের লোক’ হওয়ার সুবাদে পদ বা টিকিট পেয়ে গিয়েছেন কোনও কর্মী। পরে এলাকার মানুষজন থেকে শুরু করে দলের কর্মীদের একাংশই বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন ওই ব্যক্তির উপরে— এমন অভিযোগ পৌঁছেছে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। এই রিপোর্ট হাতে থাকলে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কে কোথায় প্রার্থী ছিলেন, কেমন কাজ করেছেন, বিভিন্ন ভোটের ফলাফলে সে কাজ প্রতিফলিত হয়েছে কি না, সে সব তথ্য দলের শীর্ষ স্তর পর্যন্ত নজরে থাকবে।
তবে তার ভিত্তিতেই পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট দেওয়া হবে কি না, সে নিয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের রাজ্য স্তরের এক নেতা শুধু বলেন, ‘‘সাংগঠনিক ভাবে দল গোছানো শুরু হয়েছে। সে লক্ষ্যেই পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত দলের সদস্যদের কাজের খতিয়ান নেওয়া হচ্ছে।’’