ফাইল চিত্র।
নতুন বিধানসভার অধিবেশন শুরুর আগেই পরস্পরের উপরে চাপ তৈরির কৌশল শুরু করে দিল তৃণমূল ও বিজেপি।
বিধানসভার কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধী বিজেপির উপরে চাপ বাড়াচ্ছিল সরকার পক্ষ। বিধায়কদের শপথের পরে এক মাস কেটে গেলেও ৪১টি কমিটি গঠন নিয়ে এত দিন কোনও আগ্রহ দেখায়নি বিরোধী বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিরোধী দলনেতার সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে তাঁকে সময়সীমা বেঁধে দেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিরোধী দলনেতাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, শুক্রবারের মধ্যে কমিটির জন্য বিজেপি বিধায়কদের নাম না পেলে সরকার পক্ষ নিজেদের বিধায়কদের নাম জমা করে দেবে। এবং সেইমতো কমিটি তৈরির জন্য স্পিকারকে অনুরোধ জানাবে। তার পরে এ দিনই দলের বিধায়কদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করে দিয়েছে বিজেপি।
অন্য দিকে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়ের বিধায়ক-পদ খারিজের দাবিকে সামনে রেখে পাল্টা চাপ রাখতে তৎপর হয়েছে বিজেপিও। সেই অভিযোগ এ দিনই জমা করতে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তবে তা হয়নি। হুগলিতে এ দিন একটি কর্মসূচিতে এসে তিনি বলেন, ‘‘আজই অভিযোগ জমা দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু স্পিকারের অফিসে জমা নেওয়ার কেউ ছিলেন না। কাল জমা করব। তা না হলে মেইলে পাঠাব।” বিষয়টি নিয়ে বিধানসচিবের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
প্রাথমিক ভাবে এ বার বিরোধীদের ৯টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার পক্ষ। তবে এ দিনের আলোচনায় পরিষীদয় মন্ত্রীর কাছে আরও একটি কমিটির জন্য দাবি জানান শুভেন্দু। তাতে সরকার পক্ষ রাজি হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই কমিটিগুলির মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান পদ নিয়ে অবশ্য ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। বিজেপি যে মুকুলের সদস্যপদ খারিজের দাবি তুলেছে, এখনও পর্যন্ত খবর, ওই পদে শাসক দলের পছন্দের প্রার্থী তিনিই। তবে পরিষদীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, স্পিকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
পিএসি-সহ বিধানসভার চারটি কমিটির জন্য নির্বাচন হবে ২৮ জুন। মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে ২৩ জুন পর্যন্ত। বিধানসভায় মোট ২৬টি স্থায়ী ও ১৫টি হাউস কমিটি আছে, যার মধ্যে চারটি কমিটির প্রধানের পদ নির্বাচিত। সেই রীতি মেনেই পিএসি, পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিংস (পিএসইউ), এস্টিমেট্স এবং লোকাল ফান্ড কমিটির জন্য নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিধানসভার সচিবালয়।
মুকুলের সদস্যপদ প্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি সম্পূর্ণ স্পিকারের এক্তিয়ারভুক্ত। তবে রাজনৈতিক স্তরে বিজেপির এই দাবি শোভা পায় না। কারণ, তৃণমূল থেকে যাওয়া সাংসদেরা পদ না ছেড়েই এখনও তাদের ঘরে রয়েছেন।’’ তাঁর বাবা সাংসদ শিশির অধিকারীর দলত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দু অবশ্য হাত জোড় করে জবাব এড়িয়ে যান।
খানাকুলের চুয়াডাঙ্গা মাঠে গত ১০ জুন বিকালে বজ্রাঘাতে মারা যান অভিজিৎ সর্দার। মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে এ দিন তাঁদের আর্থিক সাহায্য করেন শুভেন্দু-সহ বিজেপির একাধিক বিধায়ক এবং নেতারা।