সন্দেশখালিতে এনএসজি। —নিজস্ব চিত্র।
সন্দেশখালিতে উদ্ধার অস্ত্রভান্ডার। সিবিআই ও এনএসজি (ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড)-এর অভিযানে শাহজাহান শেখ-ঘনিষ্ঠের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে মিলল বিদেশি বন্দুক, গুলি, বোমা ও বিস্ফোরক! অন্তত তেমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে। ভোটের মধ্যে এই ঘটনায় রাজনৈতিক চাপানউতর তৈরি হয়েছে রাজ্যে। এই ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করে বিজেপির বিরুদ্ধে শাসকদল তৃণমূলের মন্তব্য, ‘রোবট ডেকে নাটক’ করা হচ্ছে! সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সন্দেশখালি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। তার প্রসঙ্গ টেনে পাল্টা বিজেপি প্রশ্ন তোলে, কেন দুষ্কৃতীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে রাজ্যের তৃণমূল শাসিত সরকার?
শুক্রবার সন্দেশখালিতে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, সন্দেশখালিতে ইডি, সিবিআই, এনআইএ-র পর এনএসজিও এল! আর কী? সেনা নামাতে হবে? এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের পোস্ট শুভেন্দুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে যে ভাবে বেড়ে উঠেছে শাহজাহান শেখেরা, তাতে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন উনি।’’ বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয়ও এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘এনএসজি মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে ওই মামলা থেকে সিবিআইকে সরাতে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যে জঙ্গির বাড়িতে এত বিপুল পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করে রাখা, তাকে কেন আড়াল করার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?’’
পাল্টা তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘সন্দেশখালি ইস্যু জিইয়ে রাখার জন্য পরিকল্পিত চক্রান্তে অতিনাটকীয় কাজকর্ম করে ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে দিল্লির তরফ থেকে। আগাম সাজানো নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। খবর ছড়িয়ে, যন্ত্র নামিয়ে বাজার গরম করছে। পুলিশের আরও সতর্ক থাকা দরকার।’’
শুক্রবার সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার মল্লিকপুরে শাহজাহান-ঘনিষ্ঠ হাফিজুল খাঁয়ের ভগিনীপতির বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে যান তদন্তকারীরা। মূল রাস্তা থেকে প্রায় ২০০ মিটার ভিতরে মাছের ভেড়িবেষ্টিত বাড়িটি। সেখানে যাওয়ার একটিই সরু ইট পাতা রাস্তা রয়েছে। সকাল থেকেই সেই রাস্তা আটকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সিবিআই সূত্রে দাবি, গোপন সূত্রে অস্ত্র-বোমা মজুতের খবর পাওয়া মাত্রই অভিযান চালানো হয়। হাফিজুলের আত্মীয় আবু তালেব মোল্লার বাড়িতে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয় প্রচুর বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র। এর পরেই ডাকা হয় এনএসজি-কে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তালেবের বাড়ি থেকে ১২৮ রাউন্ড গুলি , পাঁচটি অত্যাধুনিক বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র , বেশ কয়েকটি দেশি বন্দুক, বোমা তৈরির মশলা-সহ বেশ কিছু বোমা উদ্ধার হয়েছে। যেখানে-সেখানে বিস্ফোরক মজুত থাকতে পারে, এমন অনুমান করে বাড়ির আশপাশে অটোমেটিক রোবট স্ক্যানার দিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে অত্যাধুনিক অ্যাম্বুল্যান্সও।