—প্রতীকী ছবি।
সূর্য থেকে বেরিয়ে আসা তড়িদাহত কণার স্রোত অর্থাৎ সৌরঝড় নিয়ে গবেষণা নতুন নয়। ভারতের সৌরযান ‘আদিত্য এল১’-এর লক্ষ্যও সৌরঝড়ের পর্যবেক্ষণ। এ সবের মধ্যেই এ ব্যাপারে নতুন এক দিশা দেখিয়েছেন কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্টিফিক এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইজ়ার)-এর তিন বিজ্ঞানী।
সৌরকলঙ্ক এবং সৌরঝড়ের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বিষয়ক সেই গবেষণা সম্প্রতি ‘মান্থলি নোটিস অব দ্য রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি’-তে প্রকাশিত হয়েছে। সেই গবেষণায় প্রিয়াংশ জসওয়াল, চিত্রদীপ সাহা এবং অধ্যাপক দিব্যেন্দু নন্দী সৌরকলঙ্ক এবং সূর্যের চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে একটি নতুন সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। এই সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেই সৌরঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া যেতে পারে।
সূর্য আসলে উত্তপ্ত আয়নিত গ্যাস বা প্লাজ়মা দিয়ে তৈরি। এই প্লাজ়মা প্রবাহের মধ্যে বিরাট বিরাট চৌম্বক ক্ষেত্র থাকে। সেগুলির এক-একটির আকার পৃথিবীর মতো হলেও চৌম্বকশক্তি পৃথিবীর তুলনায় ১০ হাজার গুণ বেশি। এই সৌরকলঙ্কগুলি ১১ বছরের একটি পর্যায় ধরে চলে। তার মধ্যে একটি শীর্ষ পর্যায় থাকে যখন সূর্যের মধ্যে সব থেকে বেশি আলোড়ন বা উথালপাতাল পর্ব চলে। ১১ বছরের হিসাবে এগুলিকে এক-একটি সৌর পর্যায় বা সোলার সাইকেল বলে।
বর্তমানে যে পর্যায়টি (সোলার সাইকেল ২৫) চলছে সেটি আগামী বছরে শীর্ষে পৌঁছবে। আইজ়ার-এর গবেষকদের ইঙ্গিত, আগামী জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তা হতে পারে। প্রসঙ্গত, ১৯৩৫ সালে সুইস জ্যোতির্বিজ্ঞানী ম্যাক্স ওয়াল্ডেমেয়ার সৌরকলঙ্ক এবং সৌরপর্যায়ের শীর্ষ পর্যায়ের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে একটি গবেষণা করেছিলেন। কলকাতার তিন বিজ্ঞানীর গবেষণা সেই কাজকে আরও বিস্তৃত করেছে।
সৌরঝড় বিষয়টি পৃথিবীর ক্ষেত্রে বিরাট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সূর্য থেকে প্রবল পরিমাণে তড়িদাহত বা আয়নিত কণাস্রোত মহাকাশে ছড়িয়ে পড়লে তা যেমন বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহগুলিকে ক্ষতি করতে পারে তেমনই বিদ্যুতের গ্রিড বা টেলিকম ব্যবস্থারও ক্ষতি করতে পারে। সে দিক থেকে কোন সময়ে সৌরঝড় তৈরি হতে পারে
তার পূর্বাভাস দিতে পারলে বিপদ এড়ানো যেতে পারে।