সন্ধান মিলল আরও তিন জন ভুয়ো ডাক্তারের

পঞ্চসায়রের শহিদ স্মৃতি কলোনিতেও ভুয়ো চিকিৎসকের খোঁজ পায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা করছিলেন মহম্মদ আকবর আলি নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা। তাঁর আসল শিক্ষাগত যোগ্যতা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। তিনি পলাতক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

যত দিন গড়াচ্ছে, এ রাজ্যে তত ভুয়ো ডাক্তারের খোঁজ মিলছে।

Advertisement

ফের হাওড়া থেকে ভুয়ো ডাক্তারি ডিগ্রি ব্যবহার করে প্র্যাকটিসের অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। জগৎবল্লভপুরের বড়গাছিয়ার বাসিন্দা, মতিয়ার রহমান মল্লিক নামে ওই ‘চিকিৎসক’ তাঁর লেটারহেডে নামের পাশে এমবিবিএস (এইচডি) ডিগ্রি ব্যবহার করতেন। নিজেকে প্রসূতি ও শিশু বিশেষজ্ঞ বলে দাবি করতেন। বড়গাছিয়ার সকাল বাজারে মতিয়ারের চেম্বারে গর্ভপাতও হতো। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত চালিয়ে বুধবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় মতিয়ার জানান, তিনি মাধ্যমিক পাশ। তাঁর কাছে যে সব কাগজ মিলেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, তাঁর আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ডিপ্লোমা আছে। গর্ভপাত করানোর মতো উপযুক্ত ডিগ্রি সংক্রান্ত তাঁর কোনও শংসাপত্র মেলেনি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার পঞ্চসায়রের শহিদ স্মৃতি কলোনিতেও ভুয়ো চিকিৎসকের খোঁজ পায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তার পরিচয় দিয়ে চিকিৎসা করছিলেন মহম্মদ আকবর আলি নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা। তাঁর আসল শিক্ষাগত যোগ্যতা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। তিনি পলাতক। তবে, কালনার বৈদ্যপুরের ‘দন্ত চিকিৎসক’ মাহমুদ হাসান স্থানীয় লোকজনের প্রশ্নের মুখে মেনে নিয়েছেন, তাঁর ডাক্তারি ডিগ্রি নেই। মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানান, বিষয়টি তাঁর কানে এসেছে। ওই ব্যক্তির নথি পরীক্ষা করা হবে।

প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে যে ভাবে ভুয়ো চিকিৎসক ধরা পড়ছেন, তাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ইতিমধ্যেই বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ডাক্তারির কোনও একটি বিষয়ের ডিগ্রি নিয়ে অন্য বিষয়ে প্র্যাকটিসের নজিরও সামনে আসছে। ইউনানি চিকিৎসক মহম্মদ ইউনুসকে দিয়ে যে ভাবে উত্তর দমদম পুরসভা হাসপাতালে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা করানো হচ্ছিল, তা নিয়ে বুধবারই প্রশ্ন উঠেছিল।আইসিইউ-র দায়িত্বও তাঁর হাতে ছাড়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তাঁকে বরখাস্ত করল পুরসভা। এ দিন মহম্মদ ইউনুস কোনও মন্তব্য করেননি। চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি হাসপাতালে চিকিৎসকদের ইনচার্জ তরুনকান্তি ঘোষের সঙ্গে। তবে, ইউনুস বা তাঁকে যাঁরা নিয়োগ করেছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এখনও কোনও পুলিশি ব্যবস্থা না-হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল (স্বাস্থ্য) মহুয়া শীল বলেন, ‘‘কী ভাবে বিষয়টি আমাদের দফতরের নজর এড়িয়ে গেল, দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে কার কী ভূমিকা ছিল সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

এ দিনই কাটোয়ার সত্যবান মণ্ডল দুই আত্মীয়কে নিয়ে নথি জমা দেন অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা কবিতা শাসমলের কাছে। সত্যবানের বিরুদ্ধে আয়ুর্বেদিক ডিগ্রি নিয়ে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছিল দু’দিন আগে। তিনি চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বুধবার সমস্ত নথি নিয়ে সত্যবানকে দেখা করার নোটিস পাঠান অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা। সত্যবানের দেওয়া নথি খতিয়ে দেখার পরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কবিতাদেবী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement