রাজভবন। — ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুলিশের কাছে সময় চাইলেন রাজভবনের তিন কর্মী। নির্যাতিতার অভিযোগ, ঘটনার দিন ওই তিন জন তাঁকে রাজভবনে আটকে রেখেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজভবনের ওই তিন কর্মচারীকে রবিবার হেয়ার স্ট্রিট থানায় তলব করা হয়েছিল। তাঁরা যাননি। মঙ্গলবার আবার তলব করা হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই তিন জন সময় চেয়েছেন বলে খবর। যদিও তদন্তকারীরা তাঁদের সময় দিতে চান না বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। তিন বার সমনের পরও হাজিরা এড়িয়ে গেলে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা যেতে পারে।
যে তিন জনকে তলব করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এসএস রাজপুত জানিয়েছেন, তিনি কলকাতার বাইরে রয়েছেন। রাজপুত ১০দিনের সময় এবং এফআইআরের কপি চেয়েছেন পুলিশের কাছে। বাকি দু’জন সাত দিনের সময় এবং এফআইআরের কপি চেয়েছেন। অভিযুক্ত তিন জন ছাড়া আরও চার জনকে তলব করেছে পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬০ ধারায় তাঁদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে নির্যাতিতার সুপারভাইজ়ারও রয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজভবনের ঘটনা নিয়ে অভিযোগকারিণী আদালতে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঁচ ঘণ্টা গোপন জবানবন্দি দেন। তাঁর অভিযোগ, যে দিন তাঁর সঙ্গে রাজভবনে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে, সে দিন রাজভবন থেকে বেরোতে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের এফআইআরে নাম রয়েছে এসএস রাজপুত, কুসম ছেত্রী এবং সন্ত লালের। তিন জনেই রাজভবনে কর্মরত। তাঁদের রবিবার সকালে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। নতুন করে তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআরও করা হয়।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নির্যাতিতা। তিনি রাজভবনেরই অস্থায়ী কর্মী। যে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল ভারতীয় সংবিধান মেনে রক্ষাকবচ পান। সংবিধান অনুযায়ী, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি তদন্ত করা যায় না। তাই মহিলার ওই অভিযোগের তদন্ত শুরু করতে পারেনি পুলিশ। যদিও অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। রাজভবনের সে দিনের সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেয়েছে পুলিশ। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মহিলার অভিযোগ, রাজভবনের কনফারেন্স রুমে রাজ্যপালের সঙ্গে তিনি দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে রাজ্যপাল তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। মহিলা সেখান থেকে বেরিয়ে প্রথমে পুলিশ ফাঁড়িতে যান। পরে থানায় অভিযোগ জানান। পুলিশ ফাঁড়িতে যাওয়ার সময় রাজভবনে তাঁকে কয়েক জন কর্মী বাধা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। রাজ্যপাল যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর কী করণীয়, তা জানতে সংবিধান এবং আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, সেখান থেকে জানা গিয়েছে, রাজভবনের কর্মীদের বিরুদ্ধে তদন্তে কোনও বাধা নেই। তার পরেই তিন কর্মীর নামে নতুন এফআইআর করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার ডেকে পাঠানো হয়েছে। তিন জনই সময় চেয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।