—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে গরিব মাছচাষিদের ভেনামি প্রজাতির চিংড়ি সরবরাহের ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ায় তিনটি সংস্থাকে অনৈতিক ভাবে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ায় অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে মাছের চারা সরবরাহকারী সংস্থাগুলির একাংশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখেছেন। গত মাসে অভিযোগ পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে মৎস্য দফতরকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রাজ্যের মৎস্যসচিব রোশনি সেনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “মৎস্য অধিকর্তা যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে প্রাথমিক ভাবে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় গরমিল পাওয়া যায়নি। বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। পুরো রিপোর্ট নবান্নে পাঠিয়ে দেব।”
প্রতিবছর রাজ্য সরকারের তরফে গরিব মাছচাষিদের চারা মাছ দেওয়া হয়। এ ভাবেই দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মাছচাষিদের ভেনামি প্রজাতির চিংড়ির চারা বিতরণে গত সেপ্টেম্বরে ই-টেন্ডার ডাকা হয়। যেখানে দেখা গিয়েছে, তিনটি জেলার প্রত্যেকটিতে প্রায় এক কোটি ২৬ লক্ষ টাকার ভেনামি চিংড়ি সরবরাহের জন্য মাছের চারা সরবরাহকারীদের থেকে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। অভিযোগ, কেবল তিনটি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই সেপ্টেম্বর মাসে ই-টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিংড়ি মাছ সরবরাহকারী এক সংস্থার কর্ণধারের অভিযোগ, “মৎস্য দফতরের ইতিহাসে এই প্রথম কোটি টাকার উপরে চিংড়ি সরবরাহের জন্য টেন্ডার ডাকা হল। এত দিন ধরে সবার্ধিক ৫০ লক্ষ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। ফলে আমরা যারা দীর্ঘদিন দফতরে ভেনামি চিংড়ি সরবরাহে যুক্ত আছি, তারা আর্থিক সীমার জন্য আবেদনের সুযোগ পাচ্ছি না।” অভিযোগকারীদের দাবি, “শীতকালে কখনও চিংড়ি চাষ হয় না। তিনটি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই সমস্ত নিয়মকে জলাঞ্জলি দিয়ে শীতের আগে টেন্ডার ডাকা হল। কারণ, শীতের আগেই ওই তিন সংস্থার প্রয়োজনীয় শংসাপত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।”
সারা রাজ্যে ৮৫টি সংস্থা মৎস্য দফতরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চারা সরবরাহ করে। মৎস্যসচিব রোশনি সেন বলেন, “এটা ঠিকই যে, মাছের চারা সরবরাহকারী ছোট সংস্থারা এ ক্ষেত্রে বঞ্চিত। কিন্তু এখন পুরো টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব নয়।” তিনটি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “টেন্ডার এখনও খোলেনি। তা হলে তিনটি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ কী ভাবে আসছে?” অভিযোগকারীদের দাবি, “আমাদের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে সরকার যা শাস্তি দেবে, মেনে নেব।”